নোয়াখালী বন্ধুসভার উদ্যোগে শিশুরা পেল রঙিন জামা

নোয়াখালী বন্ধুসভার সহমর্মিতার ঈদছবি: বন্ধুসভা

ঈদ মানেই আনন্দ, উৎসব আর ভাগাভাগি করে নেওয়ার এক অপার সুযোগ। কিন্তু সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর জন্য ঈদের আনন্দ অনেক সময়ই অধরা হয়ে থেকে যায়। সেই আনন্দ সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে বন্ধুসভা প্রতিবছর আয়োজন করে ‘সহমর্মিতার ঈদ’। এটি একটি মানবিক উদ্যোগ, যার মাধ্যমে শিশু ও অসচ্ছল মানুষের হাতে ঈদ উপহার তুলে দেওয়া হয়। ঈদের আনন্দকে সর্বজনীন করতে বন্ধুসভার এই প্রচেষ্টা শুধু উপহার দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি ভালোবাসা, মমত্ববোধ ও সামাজিক দায়বদ্ধতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

জান্নাত, জিহাদ, আয়েশা, অহি, ঐশি, জামেলার মতো শিশুদের এবং কিছু স্বল্প আয়ের পরিবারের কাছে প্রতিবছরের মতো এ বছরও নোয়াখালী বন্ধুসভা পৌঁছে দেয় ঈদ উপহার। উপহারের মধ্যে ছিল রঙিন জামা এবং খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে ছিল লাচ্ছা সেমাই, চিনি, কনডেনসড মিল্ক, চিনিগুঁড়া চাল, এক লিটার তেল, মসুর ডাল, খেজুর ইত্যাদি। ১৯ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত ৪টি পর্বে মোট ১২০ জন শিশু ও স্বল্প আয়ের পরিবারকে রঙিন জামা ও খাদ্যসামগ্রী উপহার দিয়েছেন নোয়াখালী বন্ধুসভার বন্ধুরা।

নোয়াখালী বন্ধুসভার সহমর্মিতার ঈদ
ছবি: বন্ধুসভা

প্রথম পর্বে বন্ধুরা ঈদ উপহার নিয়ে যান নোয়াখালী জেলার সিরাজের নতুন বাড়ি, মুন্সিরতালুক, ৯ নম্বর কালাদরফ ইউনিয়ন এলাকায়; দ্বিতীয় পর্বে পূর্ব রাজারামপুর কাদির হানিফ ইউনিয়নের ইশাতুল উলুম মাদ্রাসায়; তৃতীয় পর্বে নোয়াখালী সদরের হরিনারায়ণপুর খালপাড়–সংলগ্ন এলাকা এবং চতুর্থ পর্বে শহরের বিভিন্ন জায়গায় অসচ্ছল পথচারী মানুষের কাছে উপহার পৌঁছে দেওয়া হয়।

ইশাতুল উলুম মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বন্ধুসভার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আপনাদের এই মহৎ উদ্যোগের জন্য বাচ্চারা নতুন জামা দিয়ে ঈদ উদ্‌যাপন করতে পারবে। এদের অনেকের বাবা নেই, এতিম। আপনারা উপহার নিয়ে না এলে হয়তো ওদেরকে পুরোনো জামাকাপড় পরেই ঈদ করতে হতো।’

নতুন জামা পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে মানুষগুলো। বৃদ্ধা ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘আল্লাহ তোমাগো ভালা করুক। সব সময় মানুষের পাশে থাইকো, মানুষের যত্ন কইরো।’

রঙিন জামা পেয়ে খুশি শিশুটি
ছবি: বন্ধুসভা

রঙিন জামা পেয়ে খুশি হয়ে ফাইজা (৯) বলে, ‘এই জামাটা খুব সুন্দর হইছে। আমাকে খুব ভালো মানাবে। বাসায় গিয়ে আম্মুকে দেখাইব।’
নতুন পাঞ্জাবি পেয়ে কান্না করে দেয় সাজীদ (১০)। সে বলে, ‘আইজ আঁর আব্বা থাকলে আরে আরও কত কিছু কিনে দিত। পাঞ্জাবিটা আর খুব হছন্দ অইছে।’

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা লায়লা পারভিন, মাহফুজুর রহমান, সুমন নূর, কামাল হোসেন, নিলয় মিলন, সভাপতি উম্মে ফারহিন, সাধারণ সম্পাদক মো. শিমুল, সহসভাপতি জেরিন ফাহমিদা, পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক শাহিদা রেশমি, দপ্তর সম্পাদক নয়ন চন্দ্র কুরী, ম্যাগাজিন সম্পাদক ফারিন, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি সম্পাদক নাফিস, বন্ধু আসিফ আহমেদ, আবরার ফাহিম, শান্ত দে, জিহানসহ আরও অনেকে।

বন্ধু, নোয়াখালী বন্ধুসভা