ঈদ আনন্দ ছড়াল সবার প্রাণে

ঈদ উপহার হাতে শিশুরা
ছবি: জুয়েল শীল

ঈদের খুশি সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে প্রতিবছরের মতো এবারও চট্টগ্রাম বন্ধুসভা আয়োজন করে নতুন জামা ও ঈদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচির। ‘সহমর্মিতার ঈদ’ শিরোনামের এ কার্যক্রমে তিন দফায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে ঈদের নতুন জামা ও অসহায় মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়।

আয়োজনের প্রথম ধাপে ১৯ এপ্রিল নগরীর বাকলিয়ায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিদ্যালয় মুক্ত অঙ্গন শিক্ষালয়ের ১৫০ শিশুর মধ্যে নতুন জামা বিতরণ করেন চট্টগ্রাম বন্ধুসভার বন্ধুরা। এ সময় নতুন জামা পেয়ে শিশুদের উল্লাস প্রকাশ করতে দেখা যায়। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া আট বছর বয়সী সাইফুল ইসলাম বলে, ‘আমার বাবা দিনমজুরের কাজ করেন। দিনের পর দিন জিনিসপত্রের দাম বাড়তে থাকায় এখন ভালোভাবে দুবেলা খেতে পারি না। এ বছর ঈদে নতুন জামা কিনতে পারব না, এটা একরকম নিশ্চিত ছিলাম। রাতে এ কথা চিন্তা করে গোপনে কান্না করতাম। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে নতুন জামা হাতে পেয়ে আমি দারুণ খুশি। অন্যদের মতো আমিও ঈদ উদ্‌যাপন করতে পারব।’

নতুন জামা পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিশুরা
ছবি: জুয়েল শীল

বন্ধুদের নতুন জামা বিতরণকালে চট্টগ্রাম বন্ধুসভার উপদেষ্টা জয়শ্রী দাশ বলেন, ‘শিশুরা আমাদের কাছে নক্ষত্রের মতো। আমাদের চাওয়া একটাই, তারা সব সময় শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে মানুষের মতো মানুষ হবে। আর সমাজে ছড়িয়ে পড়বে মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে।’

বন্ধুসভার আরেক উপদেষ্টা ফাহিম উদ্দিন বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্ধুসভা প্রতিবছর সহমর্মিতার ঈদ পালন করে আসছে। সহমর্মিতার ঈদ আমাদের বন্ধুদের মাঝে অন্যরকম এক আনন্দের উপলক্ষ বয়ে নিয়ে আসে। আমরা চাই, নতুন জামা বিতরণের মাধ্যমে আমাদের আনন্দটুকু কোমলমতি এসব শিশুর মাঝে ছড়িয়ে দিতে।’

১৫০ শিশুর মধ্যে নতুন জামা বিতরণ করেন বন্ধুরা
ছবি: জুয়েল শীল

সহমর্মিতার ঈদের অংশ হিসেবে দ্বিতীয় ধাপে ২০ এপ্রিল নগরীর নিম্ন আয়ের মানুষদের মধ্যে ঈদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। এ বিতরণ কার্যক্রম দুই ধাপে বাস্তবায়ন করা হয়। প্রথম ধাপে ১০০ পরিবারকে নগরীর নাসিরাবাদের পূর্ব নাসিরাবাদ এ জলিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে একত্র করে তাঁদের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় ধাপের বাকি ৫০টি পরিবার বেছে নেওয়া হয়েছিল নগরীর রাস্তার পাশে পড়ে থাকা ছিন্নমূল পরিবারগুলো থেকে। খাদ্যসামগ্রী হাতে নিয়ে রিকশাচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর চট্টগ্রাম বন্ধুসভাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘গরমের জন্য এবার রিকশা নিয়ে খুব একটা বের হতে পারিনি। সে জন্য আয়ও হয়েছে কম। এসব খাদ্যসামগ্রী আমার অনেক উপকারে আসবে।’

ঈদের উপহার হিসেবে প্রতিটি পরিবারকে দেওয়া হয়েছিল আলু, তেল, ডাল, পেঁয়াজ, চিনি, সেমাইসহ মোট ৬৫০ টাকার খাদ্যসামগ্রী। বিতরণের আগের দিন বন্ধুরা সবাই মিলে একসঙ্গে প্যাকেট করার কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। পুরো আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন করার পেছনে সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করেন ইব্রাহীম তানভীর, শাওন রায়, নুরুজ্জামান খান, মাসুদ রানা। তাঁদের সহযোগিতায় চট্টগ্রাম বন্ধুসভার উপদেষ্টা এবং অন্য বন্ধুরা নিয়োজিত ছিলেন।