ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভার পাঠচক্রে ছোট্টগল্প ‘একরাত্রি’

পাঠচক্র শেষে সেরা দুই পাঠক বন্ধুকে পুরস্কৃত করা হয়ছবি: বন্ধুসভা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট্টগল্প ‘একরাত্রি’ নিয়ে পাঠচক্রের আসর করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভা। ১ মার্চ জেলা শহরের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত পাঠাগারের সামনে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

পাঠের আসরে গল্পের ছলে রবীন্দ্রনাথের নানাবিধ বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক সবুজ মোল্লা। তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ হচ্ছেন ছোটগল্পের স্রষ্টা। ছোটগল্পের মানে হচ্ছে গল্পের শুরু থাকলেও শেষ নেই। পাঠকের মনে গল্প পড়ার পরে কৌতূহল সৃষ্টি নিবৃত্তি হয়নি। তা ছাড়া রবীন্দ্রনাথকে চর্চা করা আমাদের বর্তমান প্রজন্মের জন্য জরুরি। কেননা, একজন লেখক তাঁর আপন সত্তা দিয়ে মানুষের যাপিত জীবনের নানা দিক গল্প, উপন্যাস, নাটক, রচনাশৈলী লেখেন, যা আমাদের সবার পাঠ করা থাকলে ভেতরের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে পারব। আমরা পাঠচক্রের মাধ্যমে রবীন্দ্র বলয়ের নানাবিধ বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারব।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভার পাঠচক্রের আসর
ছবি: বন্ধুসভা

একরাত্রি গল্পের মূল আলোচনা করেন বন্ধু প্রীয়সী। তিনি তাঁর আলোচনায় বলেন, ‘“একরাত্রি” গল্পে দেখা যায় নায়ক কলকাতায় পড়াশোনা করে। কিন্তু তার বাল্যকালের সখী সুরবলার সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ের ব্যবস্থা করা হলেও নায়কের পিছুটান, আর ক্যারিয়ারের দোহায় দিয়ে এ সম্পর্ককে আর বেশি দূর যেতে দেয়নি তারা। তার মাঝে নায়িকা সুরবলার বিয়ে হয়ে যায় উকিল রামলোচন নামক একজনের সঙ্গে। অন্যদিকে লেখকের বাবা মারা গেলে লেখক অনেক কষ্টে একটি চাকরি জোগাড় করেন স্কুলের। কিন্তু নিয়তি হচ্ছে, যে স্কুলে নায়ক চাকরি পেয়েছিলেন, তার পাশেই সুরবালার স্বামীর বাসা। নায়ক তখন তার অতীতের বাল্যসখীকে দেখার প্রয়াসে সুরবালার স্বামীর সঙ্গে তার বাড়িতে যান। কিন্তু দেখা মেলে না। একদিন এক আচমকা ঝড়ের রাতে তাদের দুজনকে নিয়তি একসঙ্গে দাঁড় করায়। এটাই ছিল নায়কের সার্থকতা। পরবর্তী সময়ে গল্পের ধারাবাহিকতা এখানেই শেষ হয়। সম্পর্কের রসায়নকে এমন একটা পর্যায়ে রবীন্দ্রনাথ শেষ করেছেন, মনে হয়েছে যাকে আমরা অবজ্ঞা করি, হেলা করি, তার সামনেই আমাদের দাঁড় করায় প্রকৃতি।’

পাঠচক্র শেষে সেরা দুই পাঠক বন্ধুকে পুরস্কৃত করা হয়। পুরস্কার তুলে দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মোল্লা। তিনি বলেন, ‘বন্ধুসভার এই পাঠচক্র ধারাবাহিকভাবে চলুক। সব সময় আমি বন্ধুসভার পাশে আছি।’ এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভার সভাপতি শাহজাহান, সহসভাপতি অনন্যা সাহা, সাধারণ সম্পাদক সাদ হোসেন, বন্ধু মাহমুদুল হাসান, আলিয়া মাহবুব, নিশাত আক্তার, তানিয়া আক্তার, মো. অন্তর।

সভাপতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বন্ধুসভা