নারী দিবসে আলোচনা সভা ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে নোয়াখালী বন্ধুসভার আয়োজনছবি: বন্ধুসভা

নারীদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক অর্জনকে সম্মান জানাতে প্রতিবছর ৮ মার্চ পালন করা হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস। দিনটিতে লিঙ্গসমতা, প্রজননের অধিকার, নারীদের ওপর হিংসা ও নির্যাতন, নারীর সমানাধিকার ইত্যাদির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোয় দৃষ্টি আরোপ করা হয়। এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘নারীর সমঅধিকার, সমসুযোগ এগিয়ে নিতে হোক বিনিয়োগ’।

নারীর সমঅধিকারের গুরুত্ব তুলে ধরতে নোয়াখালী বন্ধুসভা এদিন আয়োজন করে আলোচনা সভা ও বিতর্ক প্রতিযোগিতার। বেসরকারি সংস্থা এফপিএবির হলরুমে অনুষ্ঠান শুরু হয় বেলা তিনটায়। পরিচয় পর্বের পর নারী দিবসের প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করেন বন্ধুরা। সঞ্চালনা করেন সহসাংগঠনিক সম্পাদক তাজকির হোসেন।

বিকেল চারটায় শুরু হয় জমজমাট বিতর্ক প্রতিযোগিতা। বিতর্কের বিষয় ছিল ‘নারী এগিয়ে যাওয়ার পথে পরিবারের চেয়ে সমাজের বাধা অধিক’। সনাতনী পদ্ধতিতে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় নোয়াখালী বন্ধুসভার দুইটি দল। দলের নামকরণ করা হয় দুজন মহীয়সী নারীর নামে। তাঁরা হলেন নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া ও নারী আন্দোলনের অগ্রদূত কবি বেগম সুফিয়া কামাল। বেগম রোকেয়া দলে ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শিমুল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাহিদা ইতু ও কার্যনির্বাহী সদস্য নয়ন চন্দ্র কুরী এবং বেগম সুফিয়া কামাল দলে ছিলেন প্রচার সম্পাদক সানি তামজিদ, বন্ধু শাহাদাত হোসেন ও মালিহা তাসনিম। মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমাইয়া সামান্তা ও সময় নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন তাসমিয়া ইয়াসমিন।

পক্ষ-বিপক্ষ দলের পাল্টা যুক্তিতে জমে ওঠে বিতর্কের আসর। দারুণ কথার লড়াইয়ের পর বিচারকদের চোখে বিজয়ী হয় বিপক্ষ দল বেগম সুফিয়া কামাল দলের সদস্যরা। শ্রেষ্ঠ বক্তা নির্বাচিত হন প্রচার সম্পাদক সানি তামজিদ। ফলাফল ঘোষণা করেন নোয়াখালী বন্ধুসভার উপদেষ্টা মাহফুজের রহমান। তিনি বলেন, ‘চমৎকার একটি বিতর্ক উপভোগ করেছি। বিতর্কের খাতিরে দুইটি দল নানা যুক্তি দেখালেও নারীদের সমান অধিকার নিশ্চিত করাতে আমরা সবাই একমত। নারীদের এগিয়ে যেতে সামাজিক বাধাগুলো দূর করতে হবে। এতে পুরুষ ও নারী উভয়কেই এগিয়ে আসতে হবে।’

বিতর্ক প্রতিযোগিতা
ছবি: বন্ধুসভা

বিতর্কে অংশ নেওয়া সদস্যদের পুরস্কার হিসেবে বই উপহার দেওয়া হয়। বিতর্ক শেষে শুরু হয় নারী দিবস নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা সুমন নূর ও বন্ধু জাহিদ হাসান। সুমন নূর বলেন, ‘একটা ছেলেকে বড় করার জন্য ভালো লেখাপড়া করাতে মা–বাবা সবকিছু করতে রাজি থাকেন; কিন্তু অনেক পরিবার মেয়েদের ব্যাপারে তা করতে রাজি নয়। আমাদের ছেলে ও মেয়ে উভয়কে সমান চোখে দেখতে হবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, সভ্যতা এগিয়ে যাচ্ছে। এর পেছনে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদেরও সমান অবদান আছে।’ তিনি আরও বলেন, এক-দেড় শ বছর আগে মেরি কুরী দুবার নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। তিনিও একজন নারী। তাহলে এখনকার নারীরা কেন পিছিয়ে থাকবেন? তাঁরাও সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে।

সমাপনী বক্তব্য দেন সভাপতি আসিফ আহমেদ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মাইজদী পাবলিক কলেজের শিক্ষক মো. মোজাক্কের হোসেন, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সদস্য ফজলে রাব্বি, নোয়াখালী বন্ধুসভার সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রহিম, দপ্তর সম্পাদক ধ্রুব ভূঞা, অর্থ সম্পাদক মাজরিহাতুন স্বর্ণা, দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক আরাফাত শিহাব, মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক নুসরাত জাহান, ম্যাগাজিন সম্পাদক নাফিস আহমেদ, কার্যনির্বাহী সদস্য নয়ন চন্দ্র কুরী, বন্ধু নুসরাত ফারিয়া, শাহাদাত হোসেন, রিপন সরকার, শারমিন, জারিনসহ অন্য বন্ধুরা।

সভাপতি, নোয়াখালী বন্ধুসভা