প্রথম আলোর কাছে মানুষের প্রত্যাশা অনেক

পঞ্চগড় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত পরিবেশনাছবি: প্রথম আলো

‘পাঠকপ্রিয়তায় দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় দৈনিক প্রথম আলো। পত্রিকাটি এখন একটি প্রতিষ্ঠানে দাঁড়িয়েছে। তারা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সত্যের সঙ্গে প্রকাশ করাসহ অনেক মানবিক কাজও করে। প্রথম আলোর কাছে মানুষের প্রত্যাশা অনেক। এই প্রত্যাশার জায়গাটি তৈরি করতে পারাটাও একটি কৃতিত্বের বিষয়।’

পঞ্চগড়ে প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন মকবুলার রহমান সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এহতেশামুল হক। ৯ নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পঞ্চগড় বন্ধুসভা।

জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এহতেশামুল হক বলেন, ‘সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি প্রথম আলোর অদম্য মেধাবীদের পাশে দাঁড়ানো, বন্যার্ত ও শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোসহ তাদের মানবিক কাজগুলো আমাদের সবচেয়ে বেশি টানে। এখানে সত্যে তথ্যে প্রথম আলোর কথা বলা হয়েছে। এ জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় বলতে হয়, “সত্য সে যে কঠিন, কঠিনেরে ভালোবাসিলাম। সে কখনো করে না বঞ্চনা।” প্রথম আলো এই সত্যকে ধারণ করে আরও অনেক এগিয়ে যাবে—এমনটাই প্রত্যাশা আমাদের।’

এহতেশামুল আরও বলেন, ‘এবারের অভ্যুত্থানে প্রথম আলোর নিউজগুলো দেখেও আমরা বুঝতে পেরেছি যে মাঠের বাস্তবতা কী? আমাদের শিক্ষার্থীরাসহ তরুণ প্রজন্ম কীভাবে মুক্তির জন্য লড়াই করেছে, কীভাবে নিজের জীবন দিয়েছে। প্রথম আলোর এবারের প্রতিপাদ্য “জেগেছে বাংলাদেশ”। তরুণ প্রজন্মের মাধ্যমে পাওয়া এই বাংলাদেশ যেন আর ঘুমিয়ে না পড়ে, সে জন্য আমাদের সজাগ থাকতে হবে।’

প্রথম আলোর ২৬ বছরের পাঠক ও স্কুলশিক্ষক মোজাফ্ফর রহমান লিটন বলেন, ‘প্রথম আলোর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিদিন প্রথম আলো পড়ছি। প্রথম আলোর সাহসী ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ছাপা পত্রিকায় না পড়লে পরোপুরি তৃপ্তি পাই না।’

আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে চলে গান, কবিতা আবৃত্তিসহ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
ছবি: প্রথম আলো

নতুন প্রজন্মের পাঠক দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রুফাইদা তাসনিম বলে, ‘ছোটবেলা থেকেই দেখছি আমার পরিবারের সদস্যরা প্রথম আলো পড়েন। এ জন্য প্রথম আলোর সঙ্গে পরিচয়টা সেই ছোট্টবেলার। প্রথম আলোর পড়াশোনা পাতা আমার প্রতিদিনের শিক্ষাজীবনে অনেক উপকারে আসে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলেনের পঞ্চগড়ের অন্যতম সমন্বয় মোকাদ্দেসুর রহমান বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই দেখে এসেছি, আমার বাবা প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের পত্রিকা পড়তেন। এর বড় অংশজুড়ে ছিল প্রথম আলো। আজকে সেই প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এসে অনেক ভালো লাগছে।’

আরেক সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পঞ্চগড়ের গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে আমরা অনেক সহায়তা পেয়েছি। তারা আমাদের প্রতিটি আন্দোলনের খবর তুলে ধরে বুঝিয়েছেন যে উত্তরের জেলার ছাত্র-জনতাও বসে নেই। নতুন বাংলাদেশের শহীদদের রক্তের কথা বিবেচনা করে এবং নতুন বাংলাদেশের মানুষের চিন্তাচেতনাকে ধারণ করে প্রথম আলো আরও এগিয়ে যাবে, এমনটাই প্রত্যাশা করছি।’

পঞ্চগড় বন্ধুসভার সভাপতি রায়হান শরীফের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রথম আলোর প্রতিনিধি রাজিউর রহমান, গণমাধ্যমকর্মী মোশারফ হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহসমন্বয়ক সুরাইয়া আক্তার শশী প্রমুখ।

আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে চলে গান, কবিতা আবৃত্তিসহ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। অংশ নেন বন্ধুসভার বন্ধুরা।