দিল্লি ও উত্তর প্রদেশে ভারত বন্ধুসভার মাতৃভাষা দিবস পালন

দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশনে শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে বন্ধুরা
ছবি: বন্ধুসভা

নিজের ভাষাতে মা-কে ‘মা’ বলে ডাকতে পারি, এর চেয়ে বড় সুখ আর কিছু নেই। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি এই মায়ের ভাষার অধিকার আদায়ের জন্য তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর জারি করা ১৪৪ ধারা ভেঙে রাজপথে নেমে আসে ছাত্র-শিক্ষকসহ সর্বস্তরের জনগণ। সেদিন পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার, শফিকসহ অনেকে। আহত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ।

তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিবছর এই দিনে দেশ ও দেশের বাইরের বিভিন্ন স্থানে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হয় জাতীয় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ভাষার জন্য এমন লড়াইয়ের নজির যে বিশ্বের আর কোথাও নেই। তাই তো বিদেশের মাটিতে এসেও ভাষাসৈনিক ও ভাষাশহীদদের স্মরণে মঙ্গলবার ভারতের দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশনে শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেছেন দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশিরা। তার আগে প্রভাতফেরির আয়োজন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান, ডেপুটি হাইকমিশনার নুরাল ইসলামসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে তাঁদের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। এরপর একে একে হাইকমিশনের সব উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ভারত বন্ধুসভার বন্ধুরা এবং দিল্লি ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা একত্র হয়ে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি আমি কি ভুলিতে পারি’ গান গাইতে গাইতে প্রভাতফেরিতে অংশ নেন এবং শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে বন্ধুদের পুষ্পমাল্য অর্পণ
ছবি: বন্ধুসভা

এদিকে ভারত বন্ধুসভার অনেক বন্ধু পড়াশোনা করছেন উত্তর প্রদেশের বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানের অন্যান্য বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সঙ্গে মিলে তাঁরাও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে। এ উপলক্ষে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সংক্ষিপ্ত শোভাযাত্রা ও সংগীত পরিবেশন করা হয়।

বঙ্গীয় সমাজে বাংলা ভাষার অবস্থান নিয়ে বাঙালির আত্ম-অম্বেষায় যে ভাষাচেতনার উন্মেষ ঘটে তা প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে আজীবন অম্লান থাকবে। ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাভাষী হিসেবে গর্ব করার দিন।