নোয়াখালী বন্ধুসভার পাঠচক্রে ‘কপালকুণ্ডলা’
বাংলা সাহিত্যের সার্থক উপন্যাসের ধারা সূচিত হয় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে। ‘কপালকুণ্ডলা’ তাঁর রচিত দ্বিতীয় উপন্যাস। উপন্যাসটি নিয়ে ভার্চ্যুয়াল পাঠচক্র করেছে নোয়াখালী বন্ধুসভা। গত ৩১ অক্টোবর রাত সাড়ে ৯টায় গুগল মিট অ্যাপে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
সাংগঠনিক সম্পাদক সানি তামজীদের সঞ্চালনায় পরিচয় পর্ব শেষে উপন্যাস নিয়ে বন্ধুরা আলোচনা করেন। দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক সাহেদুল ইসলাম বলেন, বাংলা সাহিত্যের প্রথম দিকের অন্যতম সার্থক রোমান্টিক উপন্যাস ‘কপালকুণ্ডলা’। মানবপ্রেম, সামাজিকতা, ইতিহাস ও অতিপ্রাকৃত উপাদানের মিশেলে বেড়ে উঠেছে কাহিনি।
অর্থ সম্পাদক তাসমিয়া ইয়াসমিন বলেন, সময়ের প্রয়োজনে লেখক পদ্মাবতী চরিত্রটিকে বিভিন্ন নাম দিয়েছেন। কখনো লুৎফুন্নেসা, কখনো মতিবিবি। ভাগ্য বিড়ম্বনায় নিজ ধর্ম হারিয়ে মুসলিম হয়, সেই সঙ্গে সম্পর্ক ঘুচে যায় স্বামীর সঙ্গেও। সে যেমন ছিল রূপবতী, তেমনি বুদ্ধিমতী।
‘কপালকুণ্ডলা’ উপন্যাসটি ১৮৬৬ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। ১৯৩৩ সালে উপন্যাসটিকে চলচ্চিত্রে রূপ দেওয়া হয়। উপন্যাসটির কেন্দ্রীয় চরিত্র কপালকুণ্ডলা বা মৃন্ময়ী এবং তার স্বামী সপ্তগ্রাম নিবাসী নবকুমার।
সাংগঠনিক সম্পাদক সানি তামজীদ বলেন, ‘কপালকুণ্ডলা’ উপন্যাসের চরিত্র চিত্রণে চমক দেখিয়েছেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র কপালকুণ্ডলা। বিয়ের পর নাম দেওয়া হয় মৃন্ময়ী। তিনি উনিশ শতকেই নারীকে উপস্থাপন করেছেন ভিন্ন মাত্রায়। কপালকুণ্ডলা ছিল রূপবতী, সাহসী, পরোপকারী, স্বাধীনচেতা, ধর্মপরায়ণা ও জাগতিক কলুষমুক্ত।
পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক শাহিদা রেশমি বলেন, ‘কপালকুণ্ডলা’ বঙ্কিমচন্দ্রের অন্যতম সৃষ্টি। ভাষার কাঠিন্য জয় করতে পারলে পড়ে তৃপ্তি পাওয়ার মতো। এটি পড়লে বাংলা উপন্যাসের সূচনালগ্নের শিল্পমান সম্পর্কে জানতে পারা যায়। সেই সঙ্গে প্রায় দেড় শ বছরে বাংলা গদ্যে ভাষার কতখানি পরিবর্তন সূচিত হয়েছে, তা অনুধাবন করতে পারা যায়।
বন্ধু ফাতেমা কানিজ বলেন, ‘বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় লেখকদের মধ্যে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় একজন। তাঁর লেখা ও সাহিত্যকর্ম পাঠক হিসেবে সব সময় আমাদের সবাইকে আকৃষ্ট করে। “কপালকুণ্ডলা” উপন্যাসে লেখক খুব সূক্ষ্ম ও সুন্দরভাবে সমাজের রীতিনীতি, ধর্মীয় কুসংস্কার ও প্রাকৃতিক পরিবেশগুলো তুলে ধরেছেন।’
পাঠচক্রে আরও যুক্ত ছিলেন নোয়াখালী বন্ধুসভার সহসভাপতি জেরীন ফাহমিদা, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আরাফাত শিহাব, স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া সম্পাদক নজরুল ইসলামসহ অন্যরা।
পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক, নোয়াখালী বন্ধুসভা