‘মানসিকতার পরিবর্তনই সমাজ পরিবর্তনের প্রথম ধাপ’
মোট তিনটি সেশনে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়—নেতৃত্ব কর্মশালা, জেন্ডার সমতা কর্মশালা ও সাংস্কৃতিক পর্ব। প্রথমে সেশনে অংশগ্রহণকারী বন্ধুরা নেতৃত্বের মৌলিক বিষয়, সমস্যা সমাধানে দলগত দক্ষতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং কমিউনিকেশন স্কিল সম্পর্কে হাতে-কলমে শেখার সুযোগ পান। নিজ নিজ ইউনিটে নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কেমন হওয়া উচিত, সেদিকেও আলোকপাত করা হয়।
দ্বিতীয় সেশনে সমতার সমাজ গড়তে তরুণদের অংশগ্রহণ কতটা জরুরি, তা তুলে ধরা হয়। বন্ধুরা জানান, নিজেদের পরিবার ও কমিউনিটিতে এই বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তাঁরা সচেতন হবেন এবং চর্চা করবেন সমতার মূল্যবোধ।
দিনের শেষভাগে আয়োজন করা হয় মনোজ্ঞ সংগীত সন্ধ্যার। পরিবেশনায় ছিল স্থানীয় ব্যান্ড টং। তারা লোকগীতি ও আধুনিক উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে গ্রামীণ বাংলার গল্প ও আবেগকে ছড়িয়ে দেন সবার হৃদয়ে। বন্ধুরা আনন্দে–গানে মিলিত হন এক ভিন্ন আবহে।
সম্মেলনে অংশ নিয়ে বেশ কয়েকজন বন্ধু তাঁদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। হাবিপ্রবি বন্ধুসভার বন্ধু নুজহাত নাওয়াল বলেন, ‘নারী অধিকার আদায় ও তা প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পেরেছি। বর্তমান সমাজে নারীদের অবস্থান বিবেচনায় এনে তাদের অধিকার নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। সমাজের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে অন্ধকারে রেখে কোনো উন্নয়ন সম্ভব নয়। তবে খেয়াল রাখতে হবে, বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে পুরুষেরাও বঞ্চনার শিকার হন এবং তাঁরাও সমান অধিকারের দাবিদার। সেই বাস্তবতাও ভুলে যাওয়া যাবে না।’
বন্ধু সাজিয়া শারমিন বলেন, ‘সমতার আলোচনা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে। এখন বুঝতে পারি, মানসিকতার পরিবর্তনই সমাজ পরিবর্তনের প্রথম ধাপ।’
বন্ধু জুন্নুরাইন সুচিস্মিতা বলেন, ‘আমরা কেবল বন্ধুত্ব করতে আসিনি, বরং শিখতে এসেছি—কীভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়, সমাজে নেতৃত্ব গ্রহণ করা যায়।’
বন্ধু মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘টং ব্যান্ডের গানগুলো শুধু গান ছিল না, ছিল আমাদের সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি। এত দিন পর লোকগান শুনে যেন মাটির গন্ধ পেলাম।’