দার্শনিক ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ফ্রাঞ্জ ফানোর লেখা ‘ব্ল্যাক স্কিন হোয়াইট মাস্ক’ বই নিয়ে পাঠের আসর করেছে জাবি বন্ধুসভা। ২৭ জানুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির ১০ নম্বর কক্ষে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
বইটি নিয়ে আলোচনা করেন পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক পারভেজ মোশাররফ। তিনি বলেন, ‘আমেরিকাতে একটা সময় নিগ্রোদের নানা ভাবে নিচু করা হতো, তাদেরকে মূল্যায়ন করা হতো না। শুধু গায়ের রং কালো হওয়ায় একরকম বিচ্ছিন্ন জাতি হিসেবে দেখা হতো। তখন সৌন্দর্যের সংজ্ঞা ছিল এমন। কেবল শরীরের চামড়া দেখেই বিচার করা হতো। সাদা চামড়ার লোকেদের মতে, কালোদের বাঁচার কোনো অধিকার নেই। তাদের শারীরিক, মানসিক ও সাংস্কৃতিকভাবে দমিয়ে রাখা হতো।’
বন্ধু সুমাইয়া জামান ‘ধামের’ নামের একটি সিরিজের নাম উল্লেখ করেন। যেটি মূলত সাদা চামড়ার মানুষেরা কীভাবে নিগ্রোদের ওপর অত্যাচার করত, সেই কাহিনি নিয়ে নির্মিত। শুধু গায়ের রং কালো হওয়ায় তাদেরকে নির্বিচারে মেরে ফেলা হতো এবং এর কোনো বিচার হতো না।
আলোচনায় সুমাইয়া জামান ‘ডুয়ালিজম’ নিয়ে ব্যাখ্যা করে বলেন, সাদা চামড়ার মানুষেরা নিজেদের হোয়াইট বলে দাবি করলেও নিগ্রোদের বলত ‘কালার্ড’। এ ছাড়া তখনকার সময়ে প্রতিবাদগুলো একটা নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। অর্থাৎ নির্দিষ্ট কিছু মানুষই আন্দোলন চালিয়ে যেত; যেদিকে এই আন্দোলন বেশি প্রয়োজনীয় ছিল, সেদিকে তেমন সাড়াশব্দ পাওয়া যেত না। ফলে এখনো দেশটির কোথাও কোথাও এমন পরিস্থিতির দেখা মিলে।
সভাপতি শেখ হামিম তাঁর আলোচনায় ‘ডুয়ালিজম’ বিষয় নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের তুলনা করে বলেন, ‘আমরা কিছু কেনাকাটার সময়ও পণ্যের মান নিয়ে দুই দেশের ভেদাভেদ করি। মানুষ জন্মগতভাবেই একপাক্ষিক। আমাদের উচিত একপাক্ষিক চিন্তাভাবনা থেকে বের হয়ে আসা। যতই নিজেদেরকে নিরপেক্ষ বলে থাকিনা কেন, যেন আমরা একপাক্ষিক না হয়ে যাই। যদি নিজের মধ্যে পরিবর্তন আনি, তবেই সমাজে পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব।’
বইমেলা সম্পাদক, জাবি বন্ধুসভা