নগরায়ণের কারণে বর্তমান শহরাঞ্চলে খালি জায়গা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তবে শহরের বড় একটা অংশজুড়ে রয়েছে বাসা কিংবা অফিসের ছাদ ও বারান্দা। এসব ছাদ বা বারান্দা বেশির ভাগ সময় পরিত্যক্ত পড়ে থাকে। তরুণ সমাজের বড় একটি অংশকে পড়াশোনা ও চাকরির জন্য শহরে থাকতে হয়। এসব পরিত্যক্ত ও স্বল্প ব্যবহৃত ছাদ ও বারান্দায় বাগান করার মাধ্যমে একে বিকল্প আয়ের উৎস হিসেবে নেওয়ার পাশাপাশি সবুজ বিপ্লব, নিরাপদ খাদ্যের উৎস ও মনের খোরাক মেটানো সম্ভব। চট্টগ্রাম বন্ধুসভা আয়োজিত ‘ছাদবাগান: তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির নিমিত্তে’ অনুষ্ঠানে বক্তাদের আলোচনায় এসব কথা উঠে আসে।
২৩ আগস্ট বিকেলে অনলাইনে আয়োজিত অনুষ্ঠানটিতে আলোচক হিসেবে ছিলেন তিলোত্তমা চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা সাহেলা আবেদীন ও মেট্রোপলিটন কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র দত্ত।
সাহেলা আবেদীনের আলোচনায় উঠে আসে, কেন তিনি ছাদবাগানে উৎসাহিত হলেন এবং সামাজিক ছাদবাগান কর্মসূচির গুরুত্ব কী। বন্ধুসভার বন্ধু সুরাইয়া ইসলাম ছাদবাগানকে টেকসই বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমের অংশ হতে পারে বলে মত দেন। পাশাপাশি নারীদের কাজ করার সুযোগ হিসেবে ছাদবাগান একটি ভালো মাধ্যম হতে পারে বলে মন্তব্য করেন। মেট্রোপলিটন কৃষি অফিসের কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র দত্ত ছাদবাগান করাকে উৎসাহিত করতে সরকার ও সিটি করপোরেশনের দেওয়া বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরেন। তিনি ছাদবাগান করার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধাপগুলো এবং যেসব বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে, সেগুলো আলোচনা করেন। বন্ধুসভার বন্ধুদের মধ্যে যাঁরা ছাদবাগানের প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহী, তাদের ফ্রি প্রশিক্ষণের ব্যাপারে একটি উদ্যোগ গ্রহণেরও আহ্বান জানান।
ফেসবুক লাইভ চলাকালে বন্ধুরা তাঁদের প্রশ্নগুলো কমেন্টে করেন এবং উপস্থাপক তা আলোচকদের কাছে পৌঁছে দেন। এ ছাড়া আলোচনার ওপর দুই ধাপে কুইজ অনুষ্ঠিত হয় এবং সবশেষে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। চট্টগ্রাম বন্ধুসভার সভাপতি মিনহাজ হোসেন বলেন, বন্ধুসভা তরুণদের সংগঠন। যে হারে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থী বের হচ্ছেন, সেই হারে চাকরি তৈরি হচ্ছে না। ফলে প্রয়োজন উদ্যোক্তা তৈরির। এ জন্য বন্ধুসভার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘ছাদবাগান: তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির নিমিত্তে’ অনুষ্ঠানটির আয়োজন। সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম তানভীর বলেন, ‘শহরে দিনের পর দিন খালি জায়গা সংকীর্ণ হয়ে আসছে। নগরায়ণের ফলে শহরে অবশিষ্ট গাছগুলোও হুমকির মুখে। চট্টগ্রাম বন্ধুসভা দায়িত্ববোধ থেকে তিলোত্তমার সঙ্গে যৌথভাবে এই কর্মশালার আয়োজন করেছে, যাতে তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়।’
আয়োজনটি উপস্থাপনা করেন প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক রুমিলা বড়ুয়া। লাইভে টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্ধুসভার আইটি ও গ্রাফিকস ডিজাইন টিম। সমন্বয়ক হিসেবে ছিলেন তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক মাহির রেজোয়ান আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষণা সম্পাদক সুরাইয়া ইসলাম ও বন্ধু তামান্না ইয়াসমিন।
তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক, চট্টগ্রাম বন্ধুসভা