বিশ্ব পরিবেশ দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘ভূমি পুনরুদ্ধার, মরুকরণ ও খরা সহনশীলতা’। দিবসটি নিয়ে তরুণদের জানা, আগ্রহ ও সচেতনতা কতটুকু, তা যাচাই করতে পরিবেশ নিয়ে অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে প্রথম আলো বন্ধুসভা। ৩ জুন অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় চার শ শিক্ষার্থী অংশ নেন। তাঁদের মধ্য থেকে বিচারকদের যাচাই-বাছাইয়ের ভিত্তিতে পাঁচজনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
৫ জুন রাত আটটায় জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের উদ্যোগে অনলাইনে অনুষ্ঠিত বিশ্ব পরিবেশ দিবসের বিশেষ আলোচনা সভায় বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন অতিথিরা। আলোচক হিসেবে ছিলেন জাতীয় পরিবেশ পদক ২০২৩ বিজয়ী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন তুহিন এবং প্রথম আলোর পরিবেশবিষয়ক বিশেষ সংবাদদাতা ইফতেখার মাহমুদ। আরও বক্তব্য দেন বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন মল্লিক। সঞ্চালনা করেন নেওয়াজুল মওলা।
আলোচনায় পরিবেশ সুরক্ষা ও বাস্তুতন্ত্র উন্নয়ন, মরুকরণ রোধ, ভূমি পুনরুদ্ধারসহ তরুণদের সম্পৃক্ত করা নিয়ে কিছু চমকপ্রদ বিষয় ওঠে আসে। জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় তরুণদের সম্পৃক্ততা নিয়ে পরিবেশবিষয়ক সাংবাদিক ইফতেখার মাহমুদ বলেন, ‘তরুণেরা যদি বুঝতে পারেন, এই যে দেশে আবহাওয়ার পরিবর্তন, মরুকরণ ও খরার বিষয়টা কীভাবে তাঁদের জীবন-জীবিকা এবং বেড়ে ওঠার সঙ্গে সম্পর্কিত, তাহলেই কেবল তাঁরা বিষয়টিকে নিজেদের সঙ্গে মেলাতে পারবেন।’
জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় জীবজগতের ক্ষুদ্র কীটপতঙ্গ থেকে শুরু করে বৃহদাকার সব ধরনের প্রজাতির নানা উদাহরণ তুলে অস্তিত্ব রক্ষার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোকপাত করেন অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন তুহিন। তিনি বলেন, আজকে থেকে ২৫ থেকে ৩০ বছর আগে ঢাকা শহরে প্রচুর ছোট ছোট জলাশয় ছিল। এসব জলাশয়ে মাছ, ব্যাঙ, সাপসহ যেসব প্রাণী থাকে, সব মিলিয়েই কিন্তু বাস্তুতন্ত্র। অধিকাংশ জলাশয় এখন নেই। সব ভরাট করে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। উন্নয়নের নামে বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস করা হচ্ছে। এসব কারণে একটু বৃষ্টি হলেই ঢাকা শহরে পানি জমে যায়। ভোগান্তিতে পড়তে হয় মানুষকে।
আলোচনার পরপরই কুইজ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। বিজয়ীরা হলেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আতিয়া সানজিদা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রিয়াদ খান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাফিউল আজাদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকিব হাসান এবং ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তামজিদ হোসেন। প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে ছিলেন জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সহসভাপতি মাহবুব পারভেজ, রুবাইয়াত সাইমুম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক নেওয়াজুল মওলা ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাহমিনা বর্ষা।
জাতীয় পর্ষদের পাশাপাশি সারা দেশের বিভিন্ন বন্ধুসভা নানা কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করে। এদিকে ‘প্লাস্টিক দিন, পরিবেশবন্ধু গাছ নিন’ স্লোগানে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ‘প্লাস্টিকের বিনিময়ে গাছ’ কর্মসূচি করে এমসি কলেজ বন্ধুসভা। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশ ও প্রতিবেশ সুরক্ষায় আগামী প্রজন্মকে সচেতন করার জন্য চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা করে সাতক্ষীরা বন্ধুসভা। এ ছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, নীলফামারী, বরিশালসহ বিভিন্ন বন্ধুসভা পরিবেশ দিবসে গাছ উপহার ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আয়োজন করে।
সাংগঠনিক সম্পাদক, জাতীয় পরিচালনা পর্ষদ