গণিত সত্যবাদী হতে শেখায়

ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত হলো ডাচ্–বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো ২৩তম আঞ্চলিক গণিত উৎসবছবি: বন্ধুসভা

৩১ জানুয়ারি, শুক্রবার। ঋতুতে শীতকাল থাকলেও আবহাওয়া বিপরীত। ভোর থেকেই রোদের উষ্ণতা ছিল অনুভব করার মতো। রোদের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ময়মনসিংহ নগরীর বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে বাড়তে থাকে খুদে গণিতবিদদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো আঞ্চলিক গণিত উৎসবে অংশগ্রহণ করতে আসে ময়মনসিংহ, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ, শেরপুর, টাঙ্গাইল ও নেত্রকোনা জেলার প্রায় ১ হাজার ৪০০ শিক্ষার্থী।

সকাল ৯টায় জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড ও আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসবের সূচনা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ময়মনসিংহ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) লুৎফুন নাহার। আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছিমা আক্তার এবং বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ময়মনসিংহ শাখার ব্যবস্থাপক মো. নজরুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ এখলাছ উদ্দিন ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ রায়হান উদ্দিন।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে অতিথিরা বলেন, ‘গণিতচর্চা মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। আত্মবিশ্বাসী মানুষ হতে গণিতের ভয় জয় করতে হবে। গণিতচর্চার মাধ্যমে জীবনকে বিকশিত করার পাশাপাশি সত্যবাদী ও যুক্তিনির্ভর সমাজ বিনির্মাণে নিয়োজিত হতে হবে। গণিত আমাদের সত্যবাদী হতে শেখায়।’

‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’—স্লোগানে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় গণিত উৎসবের এ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি। সহযোগিতা করে ময়মনসিংহ বন্ধুসভা।

প্রাইমারি, জুনিয়র, সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি চারটি বিভাগের অনলাইনে প্রাথমিক বাছাইপর্বে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা উৎসবে অংশগ্রহণ করে। সকাল ১০টা থেকে বিদ্যালয়ের ১৯টি কক্ষে গণিতের পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষার পর ময়মনসিংহ বন্ধুসভার উপদেষ্টা মো. আবুল বাশার, সাদিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ও বন্ধু মুন্নী আক্তারের সঞ্চালনায় বন্ধুসভার বন্ধুরা নাচ ও গান পরিবেশনা এবং কবিতা আবৃত্তি করেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর শুরু হয় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্নোত্তর পর্ব। পাশাপাশি চলে খাতা মূল্যায়নের কাজ।

গণিত নিয়ে শিক্ষার্থীদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন আনন্দ মোহন কলেজের গণিত বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সহযোগী অধ্যাপক এ কে এম জিয়াউল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম, ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের গণিতের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আলতাব হোসেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সহযোগী সদস্য সকাল রায়, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষক মির্জা তানজিম মুগ্ধ, সুইডেনপ্রবাসী সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ফাহিম ফেরদৌস এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক তুষার কান্তি সাহা।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক মোস্তাফিজুর রহমান, ময়মনসিংহ বন্ধুসভার উপদেষ্টা আলী ইউসুফ, তাহমিনা শেখ, সভাপতি খালিদ হাসান, সহসভাপতি রোকনুজ্জামান জুয়েল, মশিউর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মুসাফির, উম্মে সালমা, সাংগঠনিক সম্পাদক রাবিয়াতুল বুশরা, অর্থ সম্পাদক মাহমুদুস সালেহীনসহ অন্য বন্ধুরা।

সভাপতি, ময়মনসিংহ বন্ধুসভা