আমরা আস্থা রাখতে চাই প্রথম আলোর প্রতি

জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়ছবি: বন্ধুসভা

‘আমরা ২৭ বছর ধরে টিকে আছি। আমরা যে এত কথা বলছি, এত লিখছি, টিকে আছি, আমাদের মূল শক্তিটা কোত্থেকে এল? এই শক্তি হলো সত্য, সত্যই সাহস। সত্য বলেছি বলে আজকেও এভাবে কথাটা বলে যেতে পারছি। আপনারা জানেন, গত সরকারের আমলে আমরা বারবার কীভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হয়েছি। কিন্তু সত্য প্রকাশে কখনো বিরত থাকিনি।’

প্রথম আলোর ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নোয়াখালীতে সুধী সমাবেশে কথাগুলো বলেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক কথাসাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী। ২২ নভেম্বর বিকেলে নোয়াখালী পৌরসভার বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল হোসেন কচি কনভেনশন হলে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, নারী অধিকারকর্মী, সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ জেলার বিশিষ্টজনেরা অংশ নেন।

নোয়াখালী সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজী রফিক উল্যাহ বলেন, ‘প্রথম আলো কখনো সত্য থেকে বিচ্যুত হয়নি। সেই সত্যকে সামনে রেখে ভবিষ্যতের যে সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ উন্মুখ হয়ে আছে, দেশের মানুষও সেই সত্যের অনুসারী হয়ে সামনে এগোচ্ছে। এই সত্যনিষ্ঠ অগ্রযাত্রায় প্রথম আলো আমাদের উৎসাহ দিক—নতুন বাংলাদেশ গড়ার আশায় আমরা প্রথম আলোর সঙ্গ ও সহায়তা প্রত্যাশা করি।’

এ সময় উপস্থিত পাঠকেরা বলেন, ‘সঠিক এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে বলে আমরা প্রথম আলো পড়ি। এই সত্য বিবেকের সত্য। প্রথম আলোর ওপর দিয়ে অনেক ঝড় বয়ে যায়, এরপরও প্রথম আলো লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয় না। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আমরা তাকিয়ে থাকতাম প্রথম আলোর দিকে। কারণ, প্রথম আলোই সঠিক খবরটি তখন প্রচার করেছে।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক বাদল বলেন, ‘প্রথম আলোর যখন সমালোচনা হয়, তখন আমরা ধরে নিই প্রথম আলো ঠিক জায়গায় আছে। পথে পথে ঘুরে কে বই বিক্রি করছেন, কোথায় একটি দুর্লভ পাখি হারিয়ে যাচ্ছে—সেই খবরগুলো আমরা প্রথম আলোতেই দেখতে পাই।’ এ সময় তিনি স্মরণ করেন মার্কিন মহাফেজখানায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস গবেষণাকারী মিজানুর রহমানের কথা। যিনি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণাধর্মী লেখা লিখতেন।

নোয়াখালী ও নোবিপ্রবি বন্ধুসভার বন্ধুরা
ছবি: বন্ধুসভা

নোয়াখালী বন্ধুসভার উপদেষ্টা লায়লা পারভীন বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের সময় আমরা প্রথম আলোর দিকে তাকিয়ে থাকতাম সঠিক খবরটি পাওয়ার জন্য। অনেক চ্যানেল আমরা দেখি, পত্রিকা পড়ি, কিন্তু আমরা আস্থা রাখতে চাই প্রথম আলোর প্রতি। আমরা মনে করি, সব অন্ধকার কাটিয়ে প্রথম আলো সত্য উদ্ঘাটন করবে, সে জন্যই আমাদের আস্থা প্রথম আলোর প্রতি।’

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল কাইয়ুম মাসুদ বলেন, ‘সঠিক সংবাদ পরিবেশনের জন্যই আজকের এ অবস্থানে পৌঁছেছে প্রথম আলো। আশা রাখছি, প্রথম আলো সব সময় গণতন্ত্র রক্ষার কাজ করে যাবে।’

গণ অধিকার পরিষদের উচ্চ পরিষদ সদস্য আব্দুজ জাহের বলেন, ‘প্রথম আলোর স্লোগান—ভালোর সাথে আলোর পথে। এই স্লোগান যদি ব্যক্তিজীবনে প্রত্যেক মানুষ, প্রতিটি রাজনৈতিক দল, সংগঠন নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারে, তাহলে আগামীর বাংলাদেশ সুন্দর হবে। কোনো প্রতিহিংসা থাকবে না।’

প্রশ্নোত্তর পর্বে উপস্থিত অতিথিদের অনেকেই  প্রথম আলো সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত এবং জানার জন্য প্রশ্ন করেন। নোয়াখালী বন্ধুসভার সহসভাপতি জেরীন ফাহমিদা মতামত জানান বন্য প্রাণীদের বাসস্থানের জন্য প্রথম আলো কর্তৃক উদ্যোগ এবং তাদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিয়ে বিভিন্ন আর্টিকেল প্রকাশ করার জন্য। অনেকেই প্রথম আলোর ২৭ বছরের পথচলায় নিজস্ব টিভি চ্যানেল নেই কেন? এ নিয়েও প্রশ্ন করেন। সেগুলোর জবাব দেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী।

সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর নোয়াখালীর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহবুবুর রহমান। সঞ্চালনা করেন নোয়াখালী বন্ধুসভার সাবেক সভাপতি আসিফ আহমেদ। সুকুমার রায় রচিত ‘জীবনের হিসেব’ কবিতা আবৃত্তি করেন বন্ধুসভার পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক শাহিদা রেশমি। উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী ও নোবিপ্রবি বন্ধুসভার বন্ধু ও উপদেষ্টারা।

সাংগঠনিক সম্পাদক, নোয়াখালী বন্ধুসভা