‘একদিন দল বেঁধে কজনে মিলে যাই ছুটে খুশিতে হারিয়ে’ মান্না দের কণ্ঠের এই জাদুকরি গান মনে করিয়ে দেয় সেই ছোট্টবেলার চড়ুইভাতি বা বনভোজনের কথা। বনভোজন মানেই আনন্দ আর হই হুল্লোড়। ১ ফেব্রুয়ারি দিনাজপুরের ঐতিহাসিক রামসাগর জাতীয় উদ্যানে দিনাজপুর বন্ধুসভা আয়োজন করেছে বনভোজন। অংশ নেন বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষী ও উপদেষ্টারা।
শনিবার সকালটা ছিল ঘন কুয়াশায় ঢাকা। সঙ্গে হালকা হিমেল বাতাস। প্রচন্ড ঠান্ডা আর কুয়াশা উপেক্ষা করে সকাল আটটায় দিনাজপুর শহরের গণেশতলা এলাকায় প্রথম আলো অফিসে উপস্থিত হন বন্ধুরা। তাঁদের চোখ রাঙানিতে হার মেনেছে শীতের তীব্রতা। বনভোজনের বাজার করা, সাউন্ড সিস্টেমের সঙ্গে যোগাযোগ, গাড়ি ঠিক করা, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক পর্ব, র্যাফেল ড্রসহ আগের দিনই নিজেদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করে নেন বন্ধুরা।
রামসাগরের উদ্দেশে গাড়ি ছেড়ে যায় সকাল ৯টায়। সাড়ে ৯টায় রামসাগর পৌঁছে যাই। রামসাগরের বিশাল জলরাশি, বৃক্ষরাজি, চিড়িয়াখানায় থাকা পশুপাখি যেন অভিবাদন জানায় বন্ধুদের। সকালের নাশতা সেরে শুরু হয় আড্ডা। অন্যদিকে, রান্নার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চক্রবর্তী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শুভজিৎ রায়, বন্ধু জাহিন নেওয়াজ, রাকিবসহ কয়েকজন বন্ধু।
দুপুর ১২টায় শুরু হয় খেলাধুলা। এ পর্বে ছিল মেয়েদের বালিশ খেলা, সবার জন্য হাঁড়িভাঙ্গা খেলা, টেনিস বল নিক্ষেপ, হাতি উড়ে পাখি উড়ে খেলা। পর্বটি পরিচালনা করেন স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া সম্পাদক বিথী রায়। বেলা দুইটার মধ্যেই শেষ হয় রান্নার পর্ব।
খাওয়াদাওয়া সেরে শুরু হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী। সাংস্কৃতিক সম্পাদক জুঁই আফরোজ পর্বটি পরিচালনা করেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সভাপতি শবনম মুস্তারিন ও সহসভাপতি দীপু রায়। দলীয় নৃত্য, একক নৃত্য ও গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আনন্দঘন পরিবেশে শেষ হয় পর্বটি।
উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা শাহজাহান সাজু, মিজানুর রহমান পাটোয়ারি, প্রথম আলো দিনাজপুর প্রতিনিধি রাজিউল ইসলাম, দিনাজপুর বন বিভাগের কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান ও মহসীন আলী, শিক্ষক একরাম তালুকদার, সাংবাদিক মোফাচ্ছিলুল রাশেদ ও রেজাউল করিম প্রমুখ।
উপস্থিত ব্যক্তিরা বলেন, ‘প্রথম আলো বন্ধুসভা একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন। বিভিন্ন ধরনের স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের মধ্যে বন্ধুসভার সদস্যদের পাওয়া যায়। আজকের এই আয়োজনে থাকতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। আগামী দিনেও বন্ধুসভা তাদের স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ অব্যাহত রাখবে, এই প্রত্যাশা থাকল।’
বনভোজন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন মনোরঞ্জন সিংহ, সদস্যসচিব বিপ্লব ও মুনিরা শাহনাজ চৌধুরী।
ম্যাগাজিন সম্পাদক, দিনাজপুর বন্ধুসভা