মেঘনাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ব্যবসা–বাণিজ্য, মেঘনার মাছ রপ্তানি হচ্ছে দেশব্যাপী, নদীপথে যোগাযোগ ব্যবসাকে করেছে আরও সহজ। প্রতিদিন হাজারো মানুষের ভিড় জমে মেঘনার তীরে। যে মেঘনা ঘিরে এত কিছু, কিন্তু কালের পরিক্রমায় আজ সেই মেঘনার সৌন্দর্য হুমকির মুখে। হারানো মেঘনার সৌন্দর্য ফিরিয়ে দিতেই ভৈরব বন্ধুসভা মেঘনাকে পরিষ্কারের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়।
প্রথম আলোর ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবছরের মতোই ভালো কাজের উদ্যোগ নেয় ভৈরব বন্ধুসভা। এবারের ভালো কাজ মেঘনাকে ঘিরে। ভালো কাজের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘নির্মল তীর, সুন্দর ভৈরব, আমার নদী, আমার দায়িত্ব’। গত ২৪ অক্টোবর প্রথম ধাপে পরিষ্কার করা হয়। পরদিন ২৫ অক্টোবর দ্বিতীয় ধাপে নদী পরিষ্কারের কাজে নেমে পড়েন বন্ধুরা।
এদিন নদীতে নেমে পলিথিন, বোতল, প্লাস্টিক, চিপসের প্যাকেটসহ নানা ধরনের ময়লা-আবর্জনা তোলা হয়। সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে নদীর পানি থেকে ময়লা পরিষ্কারের কাজ।
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি সম্পাদক মাজহারুল ইফতি বলেন, ‘বন্ধুসভার মানবিক কাজগুলো আমাকে বেশ টানে। এবারের কাজের অভিজ্ঞতা আমার জন্য নতুন। সরাসরি এই কাজটির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে বেশ ভালো লেগেছে।’
মেঘনার পাড়ে অধিকাংশ মানুষ ঘুরতে আসেন বিকেলবেলায়। তাই বিকেলে বন্ধুরা আবারও হাজির হন সেখানে। উদ্দেশ্য সবাইকে সচেতন করা এবং সচেতনতামূলক ব্যানার স্থাপন। ‘ভৈরব মোহনা—পরিচ্ছন্নতার প্রতিজ্ঞা/যে নদী বাঁচে, সেই নদী বাঁচায়/ মেঘনার ভৈরব মোহনা, পরিচ্ছন্নতার প্রতিজ্ঞা/ নদী রক্ষায় প্রতিজ্ঞা করি, পরিচ্ছন্ন ভৈরব গড়ি/ মেঘনা হাসুক, ভৈরব জাগুক’— এগুলো ছিল ব্যানারের প্রতিপাদ্য বিষয়।
সাধারণ সম্পাদক এরফান হোসেন বলেন, ‘বন্ধুসভার বন্ধুরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছি মেঘনাকে আর দূষিত হতে দেব না। আমরা চেষ্টা করব কাজটি ধারাবাহিকভাবে গতিশীল রাখার।’
বন্ধুদের কাজ দেখে আশপাশের সবাই প্রশংসা করে। প্রথম ধাপের কাজের পর ভৈরবজুড়ে সাড়া পড়ে যায় বন্ধুসভার এই উদ্যোগ। বন্ধুরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন মাসে অন্তত একবার হলেও নদী পরিষ্কার করার কাজের এই ধারাবাহিকতা তাঁরা বজায় রাখবেন।