‘চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ও আগামী দিনগুলোতে শিক্ষার্থীদের কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশ নিয়ে কাজ করা উচিত’ শিরোনামে আলোচনা সভা করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা। ৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এটি অনুষ্ঠিত হয়। আলোচক হিসেবে ছিলেন বিতার্কিক ও অ্যাকটিভিস্ট তৌহিদ সিয়াম।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেক্ষাপটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে আওয়ামী সরকার পতনের বাস্তবিক সব চিত্র তাঁর আলোচনায় ওঠে আসে। তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘চব্বিশের স্বাধীনতার প্রথম অভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। জুলাইয়ের প্রথম থেকেই ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণভাবে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলছিল। ১৫ তারিখে এই আন্দোলনের পট ঘুরে যায়। সেদিন সন্ধ্যায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এটি করে বিগত সরকারের দোসররা।
‘এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা প্রচণ্ড প্রতিবাদে ফেটে পড়েন এবং ভিসির বাসভবনে যান হামলার বিচার চাইতে। কিন্তু সেদিন একই রাতে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে এবং ক্যাম্পাসের মদদদাতাদের সহযোগিতায় তারা বর্বর হামলা চালায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর। ১৬ তারিখের প্রথম প্রহরে হলে থাকা সব শিক্ষার্থী বের হন ভিসির বাসভবনে আটকে রাখা শিক্ষার্থীদের উদ্ধারের জন্য। একটা পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় বহিরাগত সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।’
তৌহিদ সিয়াম আরও বলেন, ‘সেদিন রাতের পরই প্রথম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্বৈরাচার ও তার দোসরদের বিতারিত করতে সক্ষম হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রথম কাতারের জায়গাটা পাকাপোক্ত করে। একই সঙ্গে চব্বিশের বাংলাদেশে প্রথম স্বাধীন ক্যাম্পাস হয়।’
আগামী দিনগুলোতে শিক্ষার্থীদের কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশ নিয়ে কাজ করা উচিত, এ বিষয়ে এই বিতার্কিক বলেন, ‘এখন আমাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশের জন্য কাজ করতে হবে। দেশকে গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আগাতে হবে। দেশে বর্তমানে যে একটা মব পরিস্থিতি চলছে, সে বিষয়েও সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, যেন কেউ বা কোনো দল তাদের বিশেষ স্বার্থের জন্য শিক্ষার্থীদের আর ব্যবহার করতে না পারে। সর্বোপুরি আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। বিশ্বাস রাখতে হবে এবং প্রত্যয়ী হতে হবে একটি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য।’
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাবি বন্ধুসভার সভাপতি সুমাইয়া জামান, সাধারণ সম্পাদক অনুপ সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল সানি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাফিসা লিপ্ত, পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক পারভেজ মোশারফ, বন্ধু সৌমিক ঘোষ, শ্রেয়সী বিশ্বাস, সামিহা ইবনাত, জান্নাতুল আনজুমসহ অন্য বন্ধুরা।
পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক, জাবি বন্ধুসভা