ভাষা আন্দোলনের গল্প শোনালেন ভাষাসৈনিক মোহাম্মদ আফজাল

ভাষাসৈনিক মোহাম্মদ আফজালকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন রংপুর বন্ধুসভার বন্ধুরাছবি: বন্ধুসভা

ভাষা আন্দোলন ও রংপুর নিয়ে পাঠচক্র করেছে রংপুর বন্ধুসভা। ৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে প্রথম আলো রংপুর অফিসে এটি অনুষ্ঠিত হয়। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাষাসৈনিক ও প্রবীণ রাজনীতিক মোহাম্মদ আফজাল। সঞ্চালনা করেন পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক আইভি আক্তার।

আলোচনায় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনীর বাঙালিবিরোধী অবস্থান ও বাংলা ভাষা নিয়ে টালবাহানা করার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন ভাষাসৈনিক মোহাম্মদ আফজাল।

১৯৫২ সালে ঢাকায় ছাত্রদের ওপর গুলি চালিয়ে হত্যা করে পুলিশ। সে খবর ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। ঢাকার বাইরে রংপুরেও দানা বেঁধে ওঠে আন্দোলন। ভাষাসৈনিক আফজাল সে সময় রংপুর জিলা স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। তিনি বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলন হলেও প্রচুর সাধারণ মানুষ পিকেটিংয়ে যোগ দেয়, নারীরাও ছিল। রংপুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে মিছিল এসে জড়ো হতো রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে।’

কারমাইকেল কলেজ রংপুরের ভাষা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ছাত্রদের পাশাপাশি শিক্ষকেরাও পাকিস্তান সরকারের রোশের শিকার হন—মতিউর রহমান, আজিজুর রহমান, তোফাজ্জল হোসেন শাহ প্রধান প্রমুখ। এ সময় মিলি চৌধুরী, মণিকৃষ্ণ সেন, শংকর বসু, দারাজউদ্দীন মণ্ডলসহ অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

রংপুর বন্ধুসভার পাঠের আসর
ছবি: বন্ধুসভা

আলোচনায় উঠে আসে, কীভাবে মোহাম্মদ আফজাল রংপুরে শহীদ মিনার তৈরি করেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সেটা ভেঙে দেয়। ১৯৭৭ সালে রংপুর পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন রাজনৈতিক মোহাম্মদ আফজাল। এরপর পুনরায় পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে শহীদ মিনার নির্মাণ করেন তিনি।

রংপুর বন্ধুসভার উপদেষ্টা মারুফ হোসেন ও রণজিৎ রায় ভাষা আন্দোলন নিয়ে তাঁদের ভাবনা তুলে ধরেন। ‘ওরা আমার মুখে ভাষা কাইড়া নিতে চায়’ গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে পাঠচক্রের সমাপ্তি ঘোষণা করেন রংপুর বন্ধুসভার সভাপতি সোহেলী চৌধুরী।

পাঠচক্রে আরও উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা জহির রায়হান, সাধারণ সম্পাদক দীপ্ত তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলামসহ অন্য বন্ধুরা।

সাধারণ সম্পাদক, রংপুর বন্ধুসভা