‘দুফর থাইক্কা ছেড়িডারে লইয়া বয়ে রইছি। যদি একখান জামা পাওন যায়। এ ছেড়ির দুই কুলে মা–বাপ কেউ নাই। তোমরার দেওয়া জামাডাই এই ছেড়ির ঈদ।’ ময়মনসিংহ বন্ধুসভার পক্ষ থেকে ঈদ উপহার পেয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এ কথা বলেন ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চর হরিপুর গ্রামের ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধা।
রাইসা, সুরাইয়া, হুজাইফা, ফজলে রাব্বি, পারভীন—ভিন্ন ভিন্ন নামের হলেও তাদের দুঃখ অভিন্ন। কারও বাবা নেই, কারও নেই মা। আবার কারও মা-বাবা থেকেও সামর্থ্য নেই নতুন পোশাক কেনার। ঈদ এলেই তারা বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে। ‘সহমর্মিতার ঈদ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২৫ মার্চ ময়মনসিংহ সদরের চর হরিপুর আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে শিশু ও তাদের পরিবারকে রঙিন জামা ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন ময়মনসিংহ বন্ধুসভার বন্ধুরা।
এবার ময়মনসিংহ বন্ধুসভার বন্ধু কানাডাপ্রবাসী তোফাজ্জল হোসেন একাই ২৯৫টি পরিবারকে সহায়তার দায়িত্ব নেন। অন্যান্য বন্ধু, উপদেষ্টা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহায়তায় এবার ময়মনসিংহ বন্ধুসভার উদ্যোগে মোট ৫৩২টি পরিবারে ঈদ উপহার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। রঙিন জামার মধ্যে মেয়েদের জন্য ছিল জামা, ওয়ান–পিস ও টু–পিস। ছেলেদের জন্য ছিল শার্ট, পাঞ্জাবি, পায়জামা। খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে ছিল সেমাই, পোলাও চাল, চিনি, প্যাকেটজাত তরল দুধ, আলু, পেঁয়াজ ও সয়াবিন তেল।
খাদ্যসামগ্রী হাতে উচ্ছ্বসিত ৭৩ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ বলেন, ‘রোজার মাসে খুব কষ্ট কইরা রোজা রাখতাছি। আফনেগোর খাদ্য পাইয়া ঈদের দিনের খাওনের চিন্তা থাকল না।’
‘সহমর্মিতার ঈদ’ কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে সহযোগিতা করেছেন উপদেষ্টা সাদিকুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মুসাফির, পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আবু নাঈম, ম্যাগাজিন সম্পাদক মুনমুন আহমেদসহ অন্য বন্ধুরা।
সভাপতি, ময়মনসিংহ বন্ধুসভা