বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। শুধু একটি দিন নয়, এটি আমাদের আত্মপরিচয়ের প্রতীক, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের এক প্রাণবন্ত প্রকাশ। সেই চেতনায় বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নতুন বছরকে বরণ করে নিয়েছে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এতে অংশ নেন হাবিপ্রবি বন্ধুসভার বন্ধুরাও।
১৪ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে, সূর্য ওঠার আগেই শুরু হয় আলপনা আঁকার কাজ। বন্ধুসভার বন্ধুরা হাতে তুলে নেন তুলি ও রং আর হৃদয়ে ধারণ করেন বৈশাখী চেতনা। তাঁরা আঁকেন বৈশাখী ফুল, পাখি, লতা-পাতা, ঘুড়ি, বাংলার লোকজ মোটিফ আর চিরন্তন শুভ নববর্ষের বার্তা।
আলপনার প্রতিটি আঁচড় যেন কথা বলে—নতুন স্বপ্নের, নতুন আশার আর নবচেতনার। এ আয়োজনকে বাস্তবায়ন করতে সার্বিক সহযোগিতায় ছিল হাবিপ্রবি প্রশাসন। বৈশাখী মেলায় হাবিপ্রবি বন্ধুসভার স্টলে ছিল রীতিমতো হুলুস্থুল কাণ্ড! বন্ধুরা নিজেরা হাতে তৈরি করেছেন নানা বৈশাখী খাবার ও হস্তশিল্প সামগ্রী—ফুলের তোড়া, চটপটি, ফুচকা, দই-ফুচকা, পানিপুরি ইত্যাদি।
প্রতিটি খাবার ও পণ্যে ছিল সৃজনশীলতা আর আন্তরিকতা। বন্ধুরা নিজেদের পকেট থেকে টাকা দিয়ে, সময় ও শ্রম দিয়ে সাজিয়ে তুলেছেন স্টলটি। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষেরা বন্ধুসভার স্টল ঘুরে উপভোগ করেন মেলার আমেজ।
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম এসেছিলেন উৎসবে। তিনি বলেন, ‘প্রতিবছরই মেলায় ঘুরে দেখি, তবে এবারের বন্ধুসভার স্টল ছিল একেবারে আলাদা। ওদের হাতে তৈরি ফুল আর ফুচকার স্বাদ ভোলার মতো নয়। সবচেয়ে ভালো লেগেছে যে শিক্ষার্থীরা নিজেরা সব করছে। এটাই আমাদের ভবিষ্যৎকে আশা জাগায়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী রাবেয়া সুলতানা বলেন, ‘বন্ধুসভার স্টলে গিয়ে মনে হচ্ছিল যেন আপন বাড়ির কেউ আপ্যায়ন করছে। এদের আন্তরিকতা, হাসিমুখ আর সৃজনশীল চিন্তা দেখে আমি অভিভূত। এমন উদ্যোগ আরও হওয়া দরকার।’
হাবিপ্রবি বন্ধুসভা ভবিষ্যতে এমন আরও ইতিবাচক ও আনন্দময় আয়োজনের মাধ্যমে বাঙালিয়ানার চর্চা ও মানবিক মূল্যবোধের পথ ধরে হাঁটবে, এই প্রত্যাশায় শেষ হয় এবারের নববর্ষ উৎসব।