উৎসবের ভিড় শেষে শিশুদের মুখে হাসি ফোটালেন বন্ধুরা
দিনটি ছিল ৫ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার। আকাশে হালকা রোদ, শহরের বাতাসে যেন উৎসবের আমেজ। সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল শিখো-প্রথম আলো জিপিএ–৫ কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা। উচ্ছ্বাসে ভরা শিক্ষার্থীরা ভিড় জমিয়েছিল হলে, হাতে পেল ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট আর স্মৃতিময় কিছু মুহূর্ত।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে ছিল অতিথি ও শিক্ষার্থীদের জন্য নানা আয়োজন। সবাইকে বিভিন্ন উপহারের পাশাপাশি দেওয়া হয় স্ন্যাকস। কিন্তু রেজিস্ট্রেশনকৃত কিছু শিক্ষার্থী না আসায় তাদের খাবারগুলো বেঁচে যায়। অবশিষ্ট এই খাবারগুলো শহরের স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে বিতরণ করেছেন মুরারিচাঁদ কলেজ বন্ধুসভার বন্ধুরা।
অনুষ্ঠান শেষে বন্ধু মনোয়ার হোসাইন ও ইউসুফ মাহদী ব্যাগভর্তি স্ন্যাকস নিয়ে বেরিয়ে যান শহরের পথে। ফুটপাতে বসা শিশুদের কাছে গিয়ে যখন খাবার বাড়িয়ে ধরল, তাদের চোখে যে আনন্দের ঝিলিক দেখা গেল, তা যেন কোনো ক্রেস্ট কিংবা সার্টিফিকেটের থেকেও উজ্জ্বল। রিকশার হ্যান্ডলে ঝুলতে থাকা ক্লান্ত মানুষটির কৃতজ্ঞ দৃষ্টি, কিংবা দিনভর শ্রমে ক্লান্ত এক মজুরের অর্ধেক হাসি—সবকিছু মিলেমিশে হয়ে উঠল সেদিনের আসল পুরস্কার।
সন্ধ্যার অন্ধকার যখন ধীরে ধীরে নেমে এল, শহরের বাতাসে রয়ে গেল এক অদৃশ্য আলো—দুই তরুণের মানবিকতার আলো। আর যাঁরা ঘটনাটি কাছ থেকে দেখেছিল, তাঁদের হৃদয়ে জন্ম নিল একটাই উপলব্ধি—মানবিকতা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অর্জন।
সাংগঠনিক সম্পাদক, মুরারিচাঁদ কলেজ বন্ধুসভা