রমজান মাসজুড়ে রক্তদান কর্মসূচি

রমজান মাসজুড়ে অসংখ্য রোগীকে রক্তদান করেছেন ময়মনসিংহ বন্ধুসভার বন্ধুরাছবি: বন্ধুসভা

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রক্তশূন্যতায় ভোগা এক রোগীর জন্য জরুরিভাবে এ নেগেটিভ রক্তের প্রয়োজন। কিন্তু কোথাও রক্তদাতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যান্য মাসের তুলনায় রমজান মাসে রক্তের সংকট বেশি হয়। জরুরি ফোন এল ময়মনসিংহ বন্ধুসভার এক বন্ধুর কাছে। দ্রুত এক রক্তদাতা বন্ধুকে খুঁজে বের করে নিয়ে যান হাসপাতালে। রোগীর স্বজনদের উপস্থিতিতে সেখানে এক ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। স্বজনদের চোখেমুখে কৃতজ্ঞতার ভাষা। বেঁচে গেল আরেকটি প্রাণ। এভাবেই রমজান মাসজুড়ে ২০ জন রোগীকে লাল ভালোবাসা উপহার দিয়েছেন ময়মনসিংহ বন্ধুসভার ২০ বন্ধু।

পরিকল্পনা ছিল ৩০ রোজায় ৩০ জন রোগীকে রক্ত দেওয়ার। সেই অনুযায়ী ৩০ জন রক্তদাতা বন্ধুর তালিকাও করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত দিতে পেরেছেন ২০ জন।

‘মানুষ মানুষের জন্য’ প্রতিপাদ্যে প্রথম রমজানে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এক শিশুকে এবি পজেটিভ রক্ত উপহার দেন বন্ধু বায়েজিদ আহমেদ। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য দিন রক্ত উপহার দেন প্রিয়রঞ্জন পাল, আলমা আরিজ, সাজ্জাদ মৃধা, হামিদুল হক, ফারিয়া আফরিন, সাদ হোসেন সাজিদ, রেদোয়ান হোসেন, মোহাম্মদ খাইরুল, তাইফ শেখ, সম্পদ সূত্রধর, সাকিব হাসান, সৌমি বড়ুয়া, খন্দকার মিম, ফয়েজ রাব্বি, মোর্শেদা খাতুন, সুমন আহমেদ, খালিদ হাসান, আলী ইউসুফ ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও দুই বন্ধু।

কেউ প্রথমবার, আবার কেউ দশমবার রক্ত দিয়েছেন। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার রক্ত দেওয়া পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক ফারিয়া আফরিন বলেন, ‘রমজান মাসে যেখানে অন্যরা রক্ত দিতে ভয় পায়, সেখানে আমরা স্বেচ্ছায় রক্তদান করেছি। অন্য রকম একটা তৃপ্তি। মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারলে ভালো লাগে।’

এমনও দিন গেছে, যেখানে বন্ধুরা রক্তদান করতে গিয়ে হাসপাতাল থেকে দুই-তিনবার করে ঘুরে এসেছেন; রোগী খুঁজে পাওয়া যায়নি বা রক্তের আর প্রয়োজন হয়নি। তবু কেউ হতাশ হননি। ভালো কাজে সব বাধা অতিক্রম করে মানুষের সেবায় নিবেদিত হয়ে কাজ করেছেন সব তরুণরা।

সাধারণ সম্পাদক, ময়মনসিংহ বন্ধুসভা