ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার পাঠচক্রে বীরাঙ্গনাদের আত্মত্যাগের গল্প
বাংলা ভাষার অভিধানে ‘বীরাঙ্গনা’ শব্দের অর্থ বীর নারী। ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে যাঁরা প্রবল সাহসের সঙ্গে লড়াই করেছেন, তাঁরা বীরাঙ্গনা উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ধর্ষণের শিকার নারীদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘বীরাঙ্গনা’ উপাধি দিয়েছিলেন।
নিঃসন্দেহে বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন এই শব্দ ব্যবহারের মধ্য দিয়ে নারীকে বীরত্বের গৌরব দান করতে। কিন্তু দেশের সামাজিক-সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ নারীর জন্য প্রযোজ্য এই শব্দ প্রত্যাখ্যান করে। সমাজ চায়নি এসব নারী মর্যাদার আসনে সমাজে পুনর্বাসিত হোক। উল্টো নির্যাতিত নারীরা অন্যের অপকর্মের দায়ভার নিজের কাঁধে তুলে নিতে বাধ্য হয়। সমাজের এই অরুচিকর, অমানবিক আচরণ সেসব নারীকে প্রান্তিক নারীতে পরিণত করে। ‘আমি বীরাঙ্গনা বলছি’ বইতে লেখক ড. নীলিমা ইব্রাহিম মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক ধর্ষিত হওয়া সাতজন নারীর করুণ কাহিনি বর্ণনা করেছেন।
১৯৯৪ সালে প্রথম প্রকাশিত এই বই নিয়ে ২১ সেপ্টেম্বর পাঠচক্র করে ঢাকা মহানগর বন্ধুসভা। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ের বন্ধুসভা কক্ষে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
পাঠচক্রে বন্ধুরা একে একে ‘আমি বীরাঙ্গনা বলছি’ বইটিতে বর্ণিত সাতজন নারীর কাহিনি নিয়ে আলোচনা করেন। একাত্তরের এই বীরদের মর্মস্পর্শী গল্প শুনে আপ্লুত হন বন্ধুরা। নির্যাতিত এই মা-বোনদের আত্মত্যাগের চেতনা নিজেদের মধ্যে ধারণ করে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করার কথাও জানান তাঁরা।
পাঠচক্রে উপস্থিত ছিলেন বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. রেদোয়ান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক নেওয়াজুল মওলা, ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার সভাপতি সাইদুল হাসান, সহসভাপতি সাফিন উজ জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার নাজিম সীমান্ত, ম্যাগাজিন সম্পাদক আশফাক আদি, জেন্ডার ও সমতাবিষয়ক সম্পাদক শারমিন আরা তিশা, বন্ধু রাজা মান্নান তালুকদার ও মীর মোশারফ অমি।
সহসভাপতি, ঢাকা মহানগর বন্ধুসভা