চুপিসারে অনুদান পৌঁছে দিই তাঁদের কাছে

বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা তুলে দিচ্ছেন সিলেট বন্ধুসভার বন্ধুরা
ছবি: বন্ধুসভা

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পুরো সিলেট। ভাটি অঞ্চলসহ ভেসেছে মফস্বল ও শহর মিলে প্রায় ৯০ শতাংশ জায়গা। বানের জলে ঘরবাড়িসহ ভেসে গেছে গৃহপালিত পশুপাখি ও গাছপালা। সাজানো–গোছানো সংসার এখন এলোমেলো। ভেসে না যাওয়া ঘরগুলোর ভেজা স্যাঁতসেঁতে তোশক, বালিশ, কাপড়চোপড়, কাগজপত্রে এখন দুর্গন্ধ। যে ঘর একা রেখে কোথাও যাওয়া হয়নি। দরজায় তালা ঝোলানোর পরও যে বাড়ির চিন্তায় দুই দিন দূরে কোথাও শান্তিতে থাকা যেত না, সেই ঘর ছেড়ে হঠাৎ বের হতে হয়েছিল প্রাণ বাঁচাতে। মনে ছিল না জরুরি কাগজপত্র সঙ্গে নেওয়ার, ভাবনায় ছিল না ঘর একা রেখে বের হওয়ার পীড়া। প্রাণের ভয়ে সবাই বেরিয়ে গিয়েছিল নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে।

এখন বন্যার পানি কমে গেছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক সাহায্য এসেছে এবং এখনো আসছে। বন্যাদুর্গত এলাকায় পৌঁছে যাচ্ছে খাবার পানি, পোশাকসহ প্রয়োজনীয় জিনিস। সিলেট বন্ধুসভা ও প্রথম আলো ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় অনুদান পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৪০০ পরিবারের কাছে। এত কিছুর পরও অসংখ্য পরিবারে আনন্দ ফেরেনি। আবার এমন কিছু পরিবার রয়েছে, যাদের পক্ষে ত্রাণের প্যাকেট আনতে যাওয়া ভীষণ লজ্জার। কারণ, এভাবে কখনো অনুদান হাত পেতে নিতে হয়নি।

আমাদের ত্রাণ কার্যক্রমের শেষ দিন ওই সব পরিবারের কাছে সহায়তা পৌঁছে দিয়েছি। চাল, ডাল, তেল, লবণ, চিনি, ময়দা, হলুদ, মরিচের প্যাকেট বিতরণ করি। কিন্তু কোনো ছবি তুলিনি। অসহায় মানুষ নিষেধ করেছিলেন যেন তাঁদের ছবি না তোলা হয়। চুপিসারে অনুদান পৌঁছে দিই তাঁদের কাছে। এখানেই থেমে থাকেনি সিলেট বন্ধুসভা। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ঈদের উপহার হিসেবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মধ্যবিত্ত পরিবারের হাতে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়।

সভাপতি, সিলেট বন্ধুসভা