‘এম সাদেকের ভালো কর্মগুলোই তাঁকে মানুষের মনে বাঁচিয়ে রাখবে’

কুমিল্লা বন্ধুসভার উদ্যোগে এম সাদেক স্মৃতি পাঠাগার উদ্বোধনছবি: বন্ধুসভা

সদ্য প্রয়াত প্রথম আলো, কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ ফটোসাংবাদিক এম সাদেকের স্মরণে ‘এম সাদেক স্মৃতি পাঠাগার’ স্থাপন করেছে কুমিল্লা বন্ধুসভা। নগরের কান্দিরপাড় নজরুল অ্যাভিনিউ এলাকায় অবস্থিত প্রথম আলো কুমিল্লা অফিসে এটি স্থাপন করা হয়। ২০ মার্চ পাঠাগারের উদ্বোধন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

ইফতার–পূর্ব সময়ে ফটোসাংবাদিক এম সাদেকের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন সবাই। এর আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ‘এম সাদেকের ভালো কর্মগুলোই তাঁকে মানুষের মনে বাঁচিয়ে রাখবে।’

বক্তব্য দেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ডা. মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কুমিল্লার সভাপতি শাহ মোহাম্মদ আলমগীর খান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জামিল আহমেদ খন্দকার, কুমিল্লা বন্ধুসভার সভাপতি মহিউদ্দিন লিটন, প্রথম আলোর কুমিল্লা প্রতিনিধি আবদুর রহমান, কুমিল্লা বন্ধুসভার সাবেক সভাপতি সৈয়দ সাইদুল হক, তাসলিমা আক্তার প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রথম আলো কুমিল্লার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা। এ সময় প্রয়াত এম সাদেকের একমাত্র সন্তান কাউসার আহমেদসহ কুমিল্লা বন্ধুসভার বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন।

এম সাদেক স্মৃতি পাঠাগারের জন্য নিজের লেখা বেশ কয়েকটি বই উপহার দিয়েছেন কুমিল্লা বন্ধুসভার উপদেষ্টা ডা. মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এম সাদেক লোভ–লালসার ঊর্ধ্বে থেকে ফটোসাংবাদিকতা করে গেছেন। বর্তমান সময়ে এমনটা দেখা বিরল। তিনি যেভাবে চলাফেরা করতেন, দেখে কখনো মনেই হয়নি তাঁর পরিবার এতটা দুরবস্থায় রয়েছে, যেটা আমরা তাঁর মৃত্যুর পর দেখেছি। এম সাদেক আমাদের মনে বেঁচে থাকবেন তাঁর কর্মের মাধ্যমে। আমাদের সবার উচিত এম সাদেকের পরিবারের পাশে থাকা।’

ফটোসাংবাদিক এম সাদেকের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন সবাই

উপদেষ্টা শাহ মোহাম্মদ আলমগীর খান বলেন, ‘নিজের কর্ম ও দক্ষতায় ফটোসাংবাদিকতায় এম সাদেক নিজেকে অনন্য স্থানে নিয়ে গেছেন। তাঁর মতো ফটোসাংবাদিক কুমিল্লা দ্বিতীয়টি নেই। সবচেয়ে বড় কথা হলো পেশাগত ও ব্যক্তিজীবনে এম সাদেক একজন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ ছিলেন।’

জামিল আহমেদ খন্দকার বলেন, ‘ব্যক্তিজীবনে এম সাদেক একজন সৎ মানুষ ছিলেন। তিনি পারিবারিক জীবন অনেক কষ্ট আর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পার করেছেন; কিন্তু কখনোই নিজেকে অসৎ পথে বিলিয়ে দেননি। আমরা এম সাদেকের জন্য দোয়া চাই সবার কাছে।’

কুমিল্লা বন্ধুসভার সভাপতি মহিউদ্দিন লিটন বলেন, ‘প্রথম আলোর কুমিল্লা আঞ্চলিক অফিসে বন্ধুসভার কর্নারে এম সাদেক স্মৃতি পাঠাগারটি স্থাপন করা হয়েছে। পাঠাগারটি সমৃদ্ধ করতে আমাদের উপদেষ্টারা, বন্ধুসভার বন্ধুরাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বই উপহার দিয়েছেন। এ ছাড়া প্রয়াত এম সাদেকের সংগ্রহে থাকা বেশ কিছু বই তাঁর সন্তান কাউসার আহমেদ পাঠাগারকে দিয়েছেন।’

প্রসঙ্গত, হার্ট অ্যাটাকে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কুমিল্লা নগরের বেসরকারি একটি হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন প্রথম আলোর কুমিল্লার ফটোসাংবাদিক এম সাদেক। ওই দিন বেলা সোয়া ১১টার দিকে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় কুমিল্লা শহরতলির গোমতী নদীর পাড়ে চানপুর এলাকায় তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। নগরের অশোকতলা এলাকার বাসিন্দা এম সাদেক মৃত্যুকালে এক ছেলে, স্ত্রী, পুত্রবধূ, নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী ও শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গেছেন।