সকাল থেকে আকাশটা মেঘলা। প্রথম আলো ভৈরব অফিস থেকে একত্র হয়ে বন্ধুরা চললাম ভৈরব আইডিয়াল স্কুল প্রাঙ্গণে। সবার মুখে তখন একই আলোচনা। দেশটা ভালো নেই। কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী পানিতে ডুবে গিয়েছে। সৃষ্টিকর্তার কাছে একটাই প্রার্থনা—সবই দ্রুতই ঠিক হয়ে যাক। শুরু হলো ঝুম বৃষ্টি। কয়েক দিন আগে জাতীয় পরিচালনা পর্ষদ থেকে ৫০০ চারা গাছ পাঠিয়েছে। ব্র্যাক মাইক্রোফাইন্যান্সের সহযোগিতায় সারা দেশে ৭০ হাজার চারা রোপণ করবেন বন্ধুসভার বন্ধুরা। গাছ লাগানো ভৈরব বন্ধুসভার বন্ধুদের কাছে সব সময় আনন্দের। দুটি করে চারা গাছ হাতে বন্ধুরা প্রবেশ করল স্কুল প্রাঙ্গণে।
গাছগুলো মাঠে রাখামাত্রই শ্রেণিকক্ষ থেকে ছুটে এল শিক্ষার্থীরা, সবার উৎসুক চোখে নানা প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে। তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সারা প্রশ্ন করল, ‘মিস কত করে গাছ? আমি কিনব।’
‘এইগুলো তো বিক্রির জন্য না। তোমাদের স্কুলের জন্যই।’
তখন ও চেঁচিয়ে বলে উঠল, ‘এই সবাই এই দিকে আয় ফ্রিতে গাছ দিচ্ছে। আমরা সবাই নেব।’
দৌঁড়ে সবাই এসে গাছ বাছাই শুরু করল। যখন বললাম, ‘এই গাছগুলো তো তোমাদের বড় আপুদের জন্য। তোমরা যত্ন নিতে পারবে না। তোমরা বড় হও, তোমাদেরও জন্যও আনব।’ তখন তারা বলতে লাগল, ‘না না, আমরা নেব। বাড়িতে গাছ লাগাব।’ ওদের আবদার না রেখে পারলাম না। গাছ পেয়ে কী খুশি!
ভৈরব বন্ধুসভার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে চারা গাছ রোপণ করা হবে বেশ কয়েকটি ধাপে। প্রথম দিন ভৈরব আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থীদের হাতে গাছ তুলে দেওয়া হয় এবং গাছ রোপণ আর যত্ন নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। ৯ম-১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের লেবুচারা এবং শিক্ষকের দেওয়া হয় আমলকীগাছের চারা।
ভৈরব বন্ধুসভার বৃক্ষরোপণ কমিটির আহ্বায়ক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘দেশের যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় গাছ অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তাই গাছ লাগাতে হবে।’
সাধারণ সম্পাদক মানিক আহমেদ বলেন, ‘আমরা চাই, প্রতিটা চারা গাছ যত্নে থাকুক, পরিচর্যা পাক। তাই তোমাদের হাতে তুলে দিচ্ছি।’
তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক সামির রহমান বলেন, ‘আমরা আরও কয়েকটি ধাপে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের হাতে গাছ তুলে দেব। আমাদের বিশ্বাস, একটি প্রাণ তোমরা রক্ষা করবে, অর্থাৎ একটি করে গাছ তোমরা বড় করবে।’
সভাপতি, ভৈরব বন্ধুসভা