‘চে গুয়েভারার জীবন ছিল গল্পের মতোই রোমাঞ্চকর। তিনি তাঁর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বিপ্লব প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, নতজানু হয়ে সারা জীবন বাঁচার চেয়ে বীরের মতো মৃত্যুকে বরণ করাই শ্রেয়। তাঁর এ আদর্শ বুকে লালন করা মানুষ এখনো যেকোনো বিপ্লবে ঝাঁপিয়ে পড়তে দ্বিধা করেন না।’
চে গুয়েভারার ৯৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন্ধুসভার উদ্যোগে কুইজ প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বক্তারা। ১৪ জুন বিকেলে জেলা শহরের শহীদ সাটু হল মার্কেটে প্রমিত কার্যালয়ে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
শুরুতেই বন্ধুসভার বন্ধুদের নিয়ে কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতা শেষে আলোচনা সভা শুরু হয়। সভায় বক্তব্য দেন উপদেষ্টা আনোয়ার হোসেন, সভাপতি আরাফাত মিলেনিয়াম, সাধারণ সম্পাদক মাসরুফা খাতুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাফিউল হাসান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান, দপ্তর সম্পাদক আসেফ উৎস, পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান, কার্যনির্বাহী সদস্য সিফা বিনতে হাবিব প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ‘চে গুয়েভারা ছিলেন আর্জেন্টিনার নাগরিক। তিনি একাধারে মার্ক্সবাদী, বিপ্লবী, চিকিৎসক, লেখক, বুদ্ধিজীবী, গেরিলা নেতা, কূটনীতিবিদ ও সমরতত্ত্ববিদ। সবচেয়ে বড় পরিচয়, কিউবার বিপ্লবে তিনি ছিলেন অন্যতম ব্যক্তিত্ব। তাঁর প্রকৃত নাম এর্নেস্তো গুয়েভারা দে লা সের্না। তরুণ বয়সে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে চে সমগ্র লাতিন আমেরিকা ভ্রমণ করেছিলেন। এ সময় এসব অঞ্চলের সর্বব্যাপী দারিদ্র্য তাঁর মনে গভীর রেখাপাত করে। ভ্রমণকালে অর্জিত অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন, এ অঞ্চলে বদ্ধমূল অর্থনৈতিক বৈষম্যের স্বাভাবিক কারণ হলো একচেটিয়া পুঁজিবাদ, নব্য ঔপনিবেশিকতাবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ। এর একমাত্র সমাধান হলো বিশ্ব বিপ্লব। এ বিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে তিনি গুয়াতেমালার সামাজিক সংস্কার আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তী সময়ে মেক্সিকো সিটিতে বসবাসের সময় তাঁর সঙ্গে রাউল কাস্ত্রো ও ফিদেল কাস্ত্রোর আলাপ হয়। চে তাঁদের ছাব্বিশে জুলাই আন্দোলনে যোগ দেন। মার্কিন মদদপুষ্ট কিউবান একনায়ক ফুলগেনসিও বাতিস্তাকে উৎখাত করার জন্য কিউবায় যান। সেখানে তিনি বিপ্লবী সংঘের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। সেকেন্ড-ইন-কমান্ড পদে পদোন্নতি হয় তাঁর। বাতিস্তা সরকারকে উৎখাত করার লক্ষ্যে দুই বছর ধরে চলা গেরিলা সংগ্রামের সাফল্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি।’
আলোচনা সভা শেষে কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী সেরা চার জন বন্ধুর হাতে পুরস্কার হিসেবে বই তুলে দেওয়া হয়। বিজয়ীরা হলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাফিউল হাসান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান, দপ্তর সম্পাদক আসেফ উৎস ও কার্যনির্বাহী সদস্য সিফা বিনতে হাবিব।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক আসিফ আহমেদ, প্রশিক্ষণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম, জেন্ডার ও সমতাবিষয়ক সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ, বইমেলা সম্পাদক মেরাজুল ইসলাম, কার্যনির্বাহী সদস্য শাকিল হোসেন, আহমেদ ওয়ালিদ, বন্ধু মুশফিক মাহাদীসহ অন্যরা।
সভাপতি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন্ধুসভা