‘বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি’ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের সুরেই সূচনা হয় যশোর বন্ধুসভার ‘রবীন্দ্র-নজরুলজয়ন্তী’ উদ্যাপন অনুষ্ঠান। ২৭ মে বিকেল চারটায় যশোর জেলা সেটেলমেন্ট অফিসের সামনের সবুজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এই আয়োজন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বসন্ত’ গীতিনাট্য নিয়ে পাঠচক্র, গান, কবিতা ও আলোচনার মাধ্যমে সাজানো হয়। আধ্যাত্মিকতা, প্রেম, সাম্য ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার আলো ছড়িয়ে দিতে এবারের আয়োজনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ, চেতনায় নজরুল’।
স্বাগত বক্তব্য দেন যশোর বন্ধুসভার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সাদ। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের জীবন, সাহিত্য ও দর্শন নিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন যশোর সরকারি মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোফাজ্জেল হোসেন, ‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’–এর প্রতিষ্ঠাতা কবি কাজী মাজেদ নেওয়াজ, যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহ্জাহান কবীর, প্রথম আলোর প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম, উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন, সহকারি তথ্য কর্মকর্তা এলিন সাইদ উর রহমান, মানবাধিকার কর্মী আইনজীবী তাহমিদ আকাশ, ব্র্যাক ব্যাংকের আইসিটি কর্মকর্তা সুদীপ্ত দাস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন দোদুল। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী দিশা রায়, কবিতা আবৃত্তি করেন অর্থ সম্পাদক খন্দকার রুবাইয়া ও বন্ধু ফয়সাল আহমেদ।
কাজী নজরুল ইসলামকে উৎসর্গ করা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতিনাট্য ‘বসন্ত’ নিয়ে পাঠচক্র অনুষ্ঠিত হয়। পাঠচক্র আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বন্ধুসভার জ্যেষ্ঠ বন্ধু মনিরা খাতুন, সহসভাপতি মুরাদ হোসেন, কামরুজ্জামান সাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন রেজা ও খন্দকার রুবাইয়া। মুখ্য আলোচক হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক মোফাজ্জেল হোসেন। আলোচনায় বক্তারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্কের কথা বলেন। রাজদ্রোহের অপরাধে জেলে থাকা কবিকে ‘বসন্ত’ গীতিনাট্য উৎসর্গ করার নানা প্রেক্ষাপটও তাঁরা তুলে ধরেন। কবি কাজী কাদের নেওয়াজের সঙ্গে কাজী নজরুল ইসলামের ট্রেন-ভ্রমণের ঘটনা স্মৃতিচারণ করেন কবি কাজী কাদের নেওয়াজ। অনুষ্ঠানের মধ্যেই চলে গান-কবিতার আসর। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বন্ধুসভার জ্যেষ্ঠ বন্ধু সাইদুর রহমান, জাহনারা জ্যোতি, প্রিয় দত্ত ও সিনথিয়া সুমি। অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন সভাপতি লাকি রানী কাপুড়িয়া।