‘যক্ষ্মাকে আর করি না ভয়, সচেতনতায় মিলবে জয়’ স্লোগানে রংপুরে দিনব্যাপী যক্ষ্মা সচেতনতাবিষয়ক প্রচারণা কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৬ আগস্ট সকালে নগরের প্রথম আলো অফিসে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
দেশব্যাপী সাধারণ মানুষের মধ্যে যক্ষ্মা বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ইউএসএআইডির পৃষ্ঠপোষকতায় আইসিডিডিআরবির পরিচালনায় প্রথম আলো যক্ষ্মা সচেতনতাবিষয়ক প্রচারণা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এই প্রকল্পের আওতায় কর্মসূচির আয়োজন করে রংপুর বন্ধুসভা।
আইসিডিডিআরবির কর্মকর্তারা জানান, যক্ষ্মার জীবাণু যে কেবল ফুসফুসকে আক্রান্ত করে তা নয়, এটি মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে, ত্বক, লিভার, অন্ত্র, কিডনি, হাড়সহ দেহের যেকোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সংক্রমণ হতে পারে। তবে ফুসফুসে যক্ষ্মা সংক্রমের হার সবচেয়ে বেশি হওয়ায় সরকারি সচেতনতামূলক প্রচারণায় সেটাকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম শুরুর প্রথম ধাপে এদিন রংপুরে দিনব্যাপী কর্মশালা সকাল সাড়ে নয়টায় শুরু হয়। উপস্থিত ছিলেন রংপুর সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর কবির, একই কার্যালয়ের জেলা সার্ভিল্যান্স চিকিৎসা কর্মকর্তা মাহবুদ-উজ-জামান, আইসিডিডিআরবির সহকারী প্রোগ্রাম ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম, আইসিডিডিআরবির ডিজাইন প্রজেক্ট রিসার্স ফিজিশিয়ান শোয়ের আকতার, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আরিফুল হক প্রমুখ। কর্মশালায় বন্ধুসভার ২৭ জন বন্ধু অংশ নেন। দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধন ঘোষণা করেন সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর কবির।
বক্তারা বলেন, যক্ষ্মা একটি পুরোনো জীবাণুঘটিত সংক্রামক ব্যাধি। বায়ুবাহিত রোগ ও হাঁচি-কাশির মাধ্যমে সংক্রমিত হয়ে থাকে। প্রধানত ফুসফুস আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন। সরকার ইতিমধ্যে বিনা মূল্যে যক্ষ্মার চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেছে। তবে এ রোগ নির্মূলে প্রয়োজন অধিকতর সচেতনতা। একনাগাড়ে নিয়মিত ওষুধ সেবনের মাধ্যমে যক্ষা প্রতিরোধ সম্ভব। বিনা মূল্যে চিকিৎসা–সম্পর্কিত সব বিষয়াবলি সর্বস্তরের মানুষকে অবগত করতে হবে।
জেলা সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর কবির বলেন, যক্ষ্মা সম্পর্কে এখনো মানুষের মধ্যে নানা কুসংস্কার প্রচলিত আছে। সমন্বিত প্রচেষ্টায় এই রোগ প্রতিরোধ সম্ভব। কমিউনিটিকেন্দ্রিক যক্ষ্মা সচেতনতা বাড়াতে ও কুসংস্কার দূর করতে কাজ করব। ভবিষ্যতে প্রথম আলো বন্ধুসভার মাধ্যমে স্কুলভিত্তিক পাইলট প্রজেক্টে সরাসরি উপস্থিত থেকে তত্ত্বাবধান করবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।
শেষ দিকে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে পাঁচটি গ্রুপে বিভক্ত করে কর্মশালা করা হয় এবং তাদের নিজস্ব অভিমত প্রদানের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞানের ওপর গ্রুপভিত্তিক আলোচনা করা হয়। দিনের শেষভাগে সনদ বিতরণের মাধ্যমে কর্মশালা সম্পন্ন হয়।
সাংগঠনিক সম্পাদক, রংপুর বন্ধুসভা