‘দিন শেষে প্রথম আলোর ওপরই আমরা ভরসা রাখি’

ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথম আলোর ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সুধী সমাবেশ
ছবি: বন্ধুসভা

‘প্রথম আলো মেরুদণ্ড সোজা করে লেখে। দিন শেষে প্রথম আলোর ওপরই আমরা ভরসা রাখি। হাজারো অসত্যের ভিড়ে, সত্য সংবাদ প্রকাশ করে প্রথম আলো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাক, এটাই আমাদের চাওয়া।’ ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথম আলোর ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সুধী সমাবেশে কথাগুলো বলেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের উপদেষ্টা আইনজীবী ইমরান হোসেন চৌধুরী।

গত ২৬ নভেম্বর বিকেলে শহরের গোবিন্দনগর এলাকার ইএসডিও প্রধান কার্যালয় চত্বরের ‘মুক্তির মন্দির সোপান তলে’ ভাস্কর্যের বেদিতে সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, নাট্যজন, শিল্পী, সংস্কৃতি-ক্রীড়া সংগঠক, চিকিৎসক, কবি-সাহিত্যিক, নারী নেত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। সার্বিক সহযোগিতা করেন ঠাকুরগাঁও বন্ধুসভার সদস্যরা।

জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি মজিবর রহমান খান। পরে প্রথম আলোর বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরে বক্তব্য দেন প্রথম আলোর উপসম্পাদক লাজ্জাত এনাব মহছি।

ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথম আলোর ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সুধী সমাবেশ
ছবি: বন্ধুসভা

সমাবেশে অতিথি হিসেবে ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘প্রথম আলো একটি ইনস্টিটিউশন, একটা প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থেই সাংবাদিকতাকে একটা মাত্রায় নিয়ে যাওয়া, এটা একটা আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে তুলনা করা যায়—এই মাত্রায় প্রথম আলোই নিয়ে গেছে। প্রথম থেকে প্রথম আলোর একটা চেষ্টা ছিল যে এই দেশে একটি সত্যিকার অর্থেই প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক এবং বুদ্ধি চর্চাতে বিশ্বাসী এক তরুণ প্রজন্মের সৃষ্টি করা।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসটাই হচ্ছে, অভ্যুত্থানের ইতিহাস। বাংলাদেশের ইতিহাস হচ্ছে, প্রতিরোধের ইতিহাস। বাংলাদেশের ইতিহাসই হচ্ছে, অন্যায়কে মেনে না নেওয়ার ইতিহাস। এই বোধটা আমাদের সবার মধ্যে সৃষ্টি করতে প্রথম আলো আমাদের সাহায্য করেছে—এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।’

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) ঠাকুরগাঁও জেলার সাধারণ সম্পাদক আবু সায়েম বলেন, ‘আমার সন্তানকে প্রথম আলোর ম্যাগাজিন কিশোর আলো, বিজ্ঞান চিন্তা পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছি। আমি মনে করি কিশোর আলো, বিজ্ঞান চিন্তার মাধ্যমে তার মেধার বিকাশ ঘটবে।’

ঠাকুরগাঁও-১ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্য প্রার্থী দেলাওয়ার হোসেন দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অটুট রাখার জন্য আধিপত্যের বিরুদ্ধে সব সময় সোচ্চার ও সাহসী ভূমিকা রাখতে প্রথম আলোর প্রতি আহ্বান জানান।

ঠাকুরগাঁওয়ের প্রবীণ শিক্ষাবিদ মনতোষ কুমার দে মনে করেন, বাসায় প্রথম আলো থাকলে ছেলেমেয়েরা এর মাধ্যমে সঠিকভাবে বড় হয়ে উঠতে পারবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে যা কিছু অর্জন, সেই অর্জনের অনেক কিছুর মধ্যে প্রথম আলো আছে। পত্রিকাটির প্রিন্ট ভার্সনে দেখি পরিচ্ছন্নতা। লেখায় পরিচ্ছন্নতা এবং সেটা পরিবেশনার মধ্যে পরিচ্ছন্নতা পাঠক হিসেবে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।’

ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক নাসরীন জাহান আইভি বলেন, ‘প্রথম আলোর অনন্য সৃষ্টি বন্ধুসভা। আমি সময় পেলেই বন্ধুসভার আয়োজনে উপস্থিত হই। তাদের সংস্পর্শে এলে মনে হয় না বয়স হয়েছে। সমাজ নিয়ে তাদের সৃজনশীল ভাবনা আমাকে অবাক করে।’

ঠাকুরগাঁও বন্ধুসভার বন্ধুরা
ছবি: বন্ধুসভা

প্রথম আলো যেভাবে যাত্রা শুরু করেছিল সেই ধারা অব্যাহত রাখার পরামর্শ দিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক উপপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘প্রথম আলোর নিউজকে আমরা কোটেশন হিসেবে ব্যবহার করি। যখন কোনো তথ্য খুঁজি, তখন দেখি তথ্যসূত্রের মধ্যে প্রথম আলো অন্যতম।’

ইকো পাঠশালা অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সেলিমা আখতার বলেন, ‘নির্ভীক সত্য তথ্য প্রদানে প্রথম আলোর বিকল্প নেই। আমরা প্রথম আলোকে বিশ্বাস করি, ধারণ করি ও লালন করি।’

অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন সাবেক জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা আবু মহিউদ্দিন, আইনজীবী জাহিদ ইকবাল, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মাসুদ আহমেদ সুবর্ণসহ অনেকে। পাঠকদের প্রশ্নের উত্তর দেন প্রথম আলোর উপসম্পাদক লাজ্জাত এনাব মহছি।

লাজ্জাত এনাব মহছি বলেন, ‘পাঠকেরাই প্রথম আলোর শক্তি। প্রথম আলো সব সময় পাঠকের মতামতের গুরুত্ব দিয়ে থাকে। পাঠকই প্রথম আলোর প্রাণ।’