পল্লিকবি জসীমউদ্দীন এবং তাঁর বিখ্যাত ‘কবর’ কবিতা নিয়ে পাঠচক্র করেছে দিনাজপুর বন্ধুসভা। ২৮ জানুয়ারি অনলাইন গুগল মিট অ্যাপে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
শুরুতেই পাঠচক্র ও পাঠাগার সম্পাদক মুনিরা শাহানাজ চৌধুরী কবিতাটির প্রথমাংশ শুদ্ধ উচ্চারণসহ আবৃত্তি করে শোনান। একে একে অন্য বন্ধুরা কবিতাটির অবশিষ্টাংশ পাঠ করে শোনান।
আবৃত্তি শেষে আলোচনায় অংশ নেন কয়েকজন বন্ধু। কবির জীবন-সাহিত্যিক অবদান এবং উত্তরাধিকারের কথা তুলে ধরেন সভাপতি শবনম মুস্তারিন। তিনি বলেন, পল্লিজীবনকে জীবন্ত করে গ্রামীণ মানুষের জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি ও আবেগকে ধারণ করতে পেরেছিলেন জসীমউদ্দীন। ১৯০৩ সালে ফরিদপুরের তাম্বুলখানা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। গ্রামীণ মানুষের সুখ-দুঃখ, বিশ্বাস, সংস্কার, আনন্দগাথার বাস্তবচিত্র লেখার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলে হয়ে ওঠেন গ্রামীণ মানুষের কণ্ঠস্বর। তাঁর লেখা ‘নক্সীকাঁথার মাঠ’, ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’, ‘ধানক্ষেত’, ‘রাখালী’ গ্রন্থগুলো বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে।
পাঠচক্র ও পাঠাগার সম্পাদক মুনিরা শাহানাজ চৌধুরী বলেন, ‘“কবর” কবিতাটি আমাদের শক্তিশালী হয়ে ওঠার উদ্দীপনা জাগায়। একজন বৃদ্ধ তার পরিবারের সদস্যের হারিয়েও কতটা শক্তিশালী মনোবল নিয়ে একমাত্র নাতিকে তার হারিয়ে যাওয়া জীবনের গল্প শোনায় এবং আগলে রাখে, তা পাঠককে ভীষণভাবে আন্দোলিত করে।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. রেদোয়ান মাহমুদ রেজা বলেন, দাদু তার নাতিকে গল্প শোনাচ্ছে, কীভাবে স্ত্রী, ছেলে, ছেলের বউ এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা একে একে দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছে। দাদু তার নাতিকে বনেদি ঘরে বিয়ে দিয়েছিলেন। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে অত্যাচার করেছিল এবং সে দাদুকে খবর পাঠায় তাকে দেখতে যাওয়ার জন্য। তৎকালীন সমাজে নারীদের অবস্থা, সামাজিক মর্যাদা, আচার প্রথা, বিশ্বাস-সংস্কার এসব কিছুই নিখুঁতভাবে জসীমউদ্দীন কবিতায় তুলে ধরেছেন। তাঁর লেখা বিভিন্ন কবিতা ও উপন্যাস আজও সমাজে সমানভাবে সমাদৃত। বাংলা ভাষা, বিশেষ করে আঞ্চলিকতার প্রাধান্য রেখে বাংলা ভাষাকে কাব্যে ও উপন্যাস সাহিত্যে ফুটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে তাঁর জুড়ি মেলা ভার।
সভাপতি, দিনাজপুর বন্ধুসভা