কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর রচিত ‘রানার’ কবিতা নিয়ে পাঠচক্রের আসর করেছে নারায়ণগঞ্জ বন্ধুসভা। ১৫ আগস্ট বিকেলে হাজীগঞ্জ দুর্গে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
শুরুতেই কবিতাটি আবৃত্তি করেন সহসভাপতি জহিরুল ইসলাম। কবির জীবনী আলোচনায় বন্ধু সেজারুল ইসলাম বলেন, ‘আট-নয় বছর বয়স থেকেই সুকান্ত লিখতে শুরু করেন। মাত্র এগারো বছর বয়সে “রাখাল ছেলে” নামে একটি গীতিনাট্য রচনা করেন। মানবতার জয়ের জন্য তিনি লড়াকু ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। অসুস্থতা অর্থাভাব তাঁকে কখনো দমিয়ে দেয়নি। বেঁচে ছিলেন মাত্র ২১ বছর। কিন্তু এই অল্প সময়েই হয়ে উঠেছিলেন বিখ্যাত।’
‘রানার’ কবিতা সম্পর্কে সভাপতি নয়ন আহমেদ বলেন, ‘রানার বা ডাকহরকরাদের কাজ ছিল বাড়িতে বাড়িতে ছুটে গিয়ে চিঠি বিলি করা। সুকান্ত ভট্টাচার্য কবিতায় তাঁদের দুঃখ–কষ্টগুলো তুলে ধরেন। তাঁরা দস্যুর ভয় কাটিয়ে মানুষের কাছে আপনজনদের মনের কথাগুলো পৌঁছে দিতেন।’
সাধারণ সম্পাদক মৌন লাকি বলেন, ‘বর্তমানে রানার নেই। এখনকার ডিজিটাল যুগে রানার হারিয়ে গেছে। কিন্তু সুকান্ত ভট্টাচার্য তাঁর কবিতার মাধ্যমে রানারের একটি রাতের গল্প বুঝিয়ে দিয়েছেন।’
পাঠচক্র শেষে হাজীগঞ্জ দুর্গ ঘুরে দেখেন বন্ধুরা। এটি নারায়ণগঞ্জ জেলার হাজীগঞ্জ এলাকায় মোগল আমলে নির্মিত একটি জলদুর্গ। জাহাঙ্গীরনগরকে (বর্তমান ঢাকা) রক্ষা করতে ষোলো শ শতকের দিকে কিছু স্থানে তিনটি জলদুর্গ গড়ে তোলা হয়েছিল। তারই একটি এই হাজীগঞ্জ দুর্গ। বিভিন্ন সূত্র মতে, মোগল সুবাদার ইসলাম খাঁ অথবা মির জুমলা কর্তৃক নদীপথে মগ ও পর্তুগিজ জলদস্যুদের আক্রমণ প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে এটি নির্মিত হয়।
সহসভাপতি জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘পরিচর্যার অভাবে দুর্গটির আর আগের জৌলুশ নেই। সরকারের উচিত দেশের এ রকম ঐতিহাসিক স্থানগুলো পরিচর্যা করা ও সবার সামনে বাংলার ইতিহাস তুলে ধরা। নইলে এই ইতিহাস একদিন মুছে যাবে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বন্ধু লাইলাতুন নুর, ইলফা খাতুন, আবির হোসেন ও বেলায়েত হোসেন।
বন্ধু, নারায়ণগঞ্জ বন্ধুসভা