জন্মের পর পিতৃপ্রদত্ত নাম ছিল ‘তারাক্ষ্যাপা’। পুতুলের মতো ফুটফুটে নজরকাড়া ছিল বলে মা আবার লুকিয়ে লুকিয়ে ডাকতেন ‘নজর আলী’। সেই তারাক্ষ্যাপা কিংবা নজর আলী থেকে পরবর্তী সময়ে হয়ে ওঠেন দুখু মিয়া। কিন্তু কে জানত, এই তারাক্ষ্যাপা একদিন সত্যিই অন্যায়ের বিরুদ্ধে খেপে যাবেন? লিখে ফেলবেন, ‘যতসব বন্দী-শালায়/ আগুন জ্বালা আগুন জ্বালা।’ কে জানত, নজর আলী সত্যিই লেখার মাধ্যমে সবার নজর কেড়ে নেবেন? কে জানত, দুখু মিয়া দুখুদের পক্ষ নিয়ে কবিতা লিখবেন, বিদ্রোহ করবেন! আবির্ভাব হবেন বিদ্রোহী কবি হিসেবে!
হ্যাঁ, বলছিলাম বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কথা। আমাদের জাতীয় কবি। ১৮৯৯ সালের ২৪ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৮ বছর বয়সে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেন। ২৩ বছর বয়সে ‘বিদ্রোহী’ কবিতা লিখে রাতারাতি বিদ্রোহী কবি হিসেবে বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। তাঁর রচিত ‘চল্ চল্ চল্’ বাংলাদেশের রণসংগীত।
অসামান্য সাহিত্যপ্রতিভার স্বীকৃতিস্বরূপ কাজী নজরুল ইসলাম একুশে পদক, স্বাধীনতা পুরস্কার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি–লিট ডিগ্রি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগত্তারিণী স্বর্ণপদক, ভারতের পদ্মভূষণসহ অসংখ্য পদক, পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন। মহান এই কবির জন্মদিনে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) বন্ধুসভা আয়োজন করে অনলাইন পাঠচক্রের আসর। গত ২৪ মে অনলাইন গুগল মিট অ্যাপে এটি অনুষ্ঠিত হয়। বিষয় ছিল ‘নজরুল-জীবনের বৈচিত্র্য’।
ভার্চ্যুয়াল এই পাঠচক্রে বন্ধুরা নজরুলের বৈচিত্র্যময় জীবনের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন। পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক নকীবুল হক আলোচনা করেন নজরুলের জীবন নিয়ে লেখা একমাত্র উপন্যাস ‘আমারে দেব না ভুলিতে’ নিয়ে। সভাপতি আবু রায়হান পাঠ করেন এ বি এম ফয়েজ উল্লাহ রচিত প্রবন্ধ ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশে নজরুল’।
পাঠচক্রে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রচার সম্পাদক আবেদুল হক, দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক ইতু রানী কুরী, মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক তাজমিলুর রহমানসহ অন্য বন্ধুরা।
পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক, নোবিপ্রবি বন্ধুসভা