টেবিল

ছোটবেলা থেকেই আম্মু আমাকে চেয়ার-টেবিলে পড়তে বসাতেন। যখন আমি তৃতীয় শ্রেণিতে, তখন আমার জন্য কাঠের একটি টেবিল ও দুইটি চেয়ার নিয়ে আসেন। গৃহশিক্ষক এলে টেবিল–চেয়ারে পড়তে বসতে হতো। আমার খুব একটা ভালো লাগত না টেবিলে পড়তে। আমি বিছানাতে পড়তে বসতাম, আর ঘুমিয়ে যেতাম। আবার কখনো ঝিমোতাম।
আম্মু বলতেন, ‘পড়ার একমাত্র উপযুক্ত জায়গা হলো টেবিল। বিছানা মানে অলসতা, ঘুম, আরামের জায়গা। পড়ালেখা আরামের না। পড়তে পড়তে ঘুমালে বড় হতে পারবি না।’ আমাকে টেবিলে পড়তে বসতে হতো। কিন্তু পড়ায় ছিল আমার ভীষণ অনীহা। আর বেশ ফাঁকিবাজ ছিলাম।
এভাবেই কেটে গেল শিক্ষাজীবনের ১৭টি বছর।
শিশু শ্রেণি থেকে অনার্স শেষ বর্ষ। এই সময়ে পরিবারে সদস্য আরও বেড়েছে। স্কুল-কলেজপড়ুয়া বেড়েছে। তেমনি টেবিলও বেড়েছে, নানা আকারের টেবিল এসেছে বাড়িতে।
এখন টেবিলে না বসলে আমার পড়া হয় না। কেন যেন কোনো পড়া মাথাতেই ঢোকে না।
এখন আমার পড়া মানে স্কেল, খাতা, পেনসিল, কলম, ক্যালকুলেটর, বই আর সেই শৈশবের কাঠের টেবিল–চেয়ার। আমার একমাত্র পড়ার সঙ্গী, আমার প্রিয় পড়ার টেবিল।
মুসলিমা আক্তার: অনুষ্ঠান সম্পাদক, যশোর বন্ধুসভা